সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৮ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : করোনার প্রকোপ কিছুটা কমেছিল ফেব্রুয়ারি মাসে। তবে সম্প্রতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ফের বাড়ছে।
এরমধ্যে ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
যদিও শিক্ষক-কর্মচারীদের এই সময়ের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন নেওয়ার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।
দেশে হঠাৎ করে বাড়ছে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮ জন, যা গত ১৯ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি একদিনে ১৮ জন মারা যায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মৃত্যুর সংখ্যা ওঠানামা করলেও ১৮ ছাড়ায়নি। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১ হাজার ১৫৯ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা গত আড়াই মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ১ হাজার ২৩৫ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়।
কিন্তু এরই মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন রোববার (১৪ মার্চ) মহামারি পরবর্তীতে কক্সবাজারে কয়েকটি স্কুল খোলার প্রস্তুতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
এসময় তিনি বলেন, সারাদেশে মহামারি করোনা পরবর্তী স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রাথমিক স্তরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তাই এই সময়ের পূর্বেই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সব শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী কক্সবাজারে সাহিত্যিকা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুনরায় খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
উপস্থিত শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সবসময় মাস্ক পরিধান করা নিশ্চিত করতে হবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করতে নির্দেশনা ইতোমধ্যে সারাদেশে সব শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই নির্দেশিকাটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ, বিশ্বব্যাংক, সিডিসি (যুক্তরাষ্ট্র)-এর আর্ন্তজাতিক নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রণয়ন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের আসন বণ্টনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিয়ম মেনে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার/পরিষ্কারের ব্যবস্থা করা এবং হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার পালন করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছে স্কুল-কলেজগুলো। এজন্য স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এরই মধ্যে করোনার টিকা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রতিদিন নতুন করে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিভাবক-শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে শনিবার (১৩ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সবাইকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে ডিসি-ইউএনওদের নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন স্কুল-কলেজগুলো খোলার প্রস্তুতির বিষয় নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ফোন করে কথা বলা যায়নি।
তবে শিক্ষামন্ত্রী শুক্রবার (১২ মার্চ) এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতির ঊর্ধ্বগতি থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে।