বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা পরিষদ কার্যালয়-এ কর্মরত সিএ কনক দেব মিঠু, উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ‘আমার সিলেট নিউজ ডট কম’ এবং ‘সিলেট বিডি নিউজ ডটকম’ নামক অনলাইন পোর্টালে বেশ কয়েকটি অভিযোগ এনে একপেশে একটি সংবাদ প্রচার হয়েছে। যা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্ট করেছে। ‘মাসোহারা না পেলে কনক দেব মিঠু উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ম্যানেজ করে বালু-মাটি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট করান’-বলে সংবাদে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা তালুকদার-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশনায় এবং সময়ে সময়ে অত্র উপজেলার স্থানীয় লোকজনের গোপন সংবাদ কিংবা সংবাদ মাধ্যমে অবৈধভাবে মাটি, বালি উত্তোলন বিষয়ে সংবাদ প্রচার হওয়ার বিষয়টি নজরে আসলে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। এতে মিঠু বা অন্য কারো হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।”
পরিষদ থেকে সর্বসাকূল্যে ১৫,০০০ টাকা বেতন নেয়ার বিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী একজন অফিস সহায়কের (২০তম গ্রেডে পূর্বতন এমএলএসএস) সর্বসাকূল্যে বেতন-ভাতাদি ১৪,৪৫০/-টাকা। সুতরাং সিএ কনক দেব মিঠু বা তার পদের বেতন-ভাতাদি এর চেয়ে অনেক বেশি- সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এছাড়া সে উপজেলা পরিষদ থেকে নয়, আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়ারের মাধ্যমে হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন ভাতাদি গ্রহণ করে আসছে।”
বইমেলার নামে টাকা উত্তোলন সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, “কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় এ বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বই মেলার আয়োজন হয়নি, তাই বইমেলার জন্য কোন টাকাও উত্তোলন হয়নি। ডিসেম্বর-২০২০ মাসে প্রকল্প চূড়ান্ত করে জানুয়ারি-২০২১ মাসে চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে। সে তালিকা দেখলেই বুঝতে পারবেন ‘বইমেলা’ নামে কোন প্রকল্প নেই। সুতরাং বইমেলার জন্য টাকা উত্তোলন করে বইমেলা আয়োজন না করার যে বিষয়টি সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে- তাও সঠিক নয়।”
তিনি বলেন, “প্রকাশিত সংবাদে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে যে উদ্বুদ্ধকরণ সভার কথা বলা হয়েছে- সে সভা হয়েছে এবং সেখানে অংশগ্রহণকারীগণের স্বাক্ষর রয়েছে। সভায় অংশগ্রহণকারী সরকারি কর্মকর্তা/ কর্মচারী/ জনপ্রতিনিধি স্বাক্ষর দিয়ে টাকা পাননি- তা বলার সুযোগ নেই। আর যে প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে, সে প্রকল্প কমিটি-তে ‘মিঠু’ সভাপতি/সম্পাদক কিছুই নন। তাই তার কিছুই করাও নেই।” তিনি আরো বলেন, “ঠিকভাবে প্রশিক্ষণ বাস্তবায়ন হয়েছে বলেই উপজেলা প্রকৌশলী বিল দেয়ার সুপারিশের প্রেক্ষিতে এডিপির নীতিমালা অনুযায়ী আমার স্বাক্ষরের পর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চূড়ান্ত ভাবে বিল ছাড় করেন। সুতারং কনক দেব মিঠু পরিষদ থেকে বা তার পদের সুবিধা ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন বা লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে আমার জানা নেই।”
বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বশির আহমেদ বলেন, “মিঠুর পরিবার তার বাপ-দাদার আমল থেকেই বিলাসবহুল জীবন যাপন করে আসছে। টিভিতে ১৯৮৬ কিংবা ১৯৯০ এর ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে তাদের বাড়িতে আশেপাশের গ্রামের লোকজন সমবেত হতো, তখন আশেপাশে আর কারো টিভি ছিলো না।” তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে মিঠু তার পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নয়। তাদের একান্নবর্তী পরিবার। তার ছোট চাচা ঢাকা মহানগর কোর্টের এডভোকেট, চাচী বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা, তার আরেক চাচা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, তার ছোটভাই স্বর্ণব্যবসায়ী, তার পিতাও এ ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন।”
বাহুবল উপজেলার ১নং স্নানঘাট ইউ/পি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম বলেন, “মিঠু একজন ভদ্র, সভ্য ও ভালো ছেলে। শুধু আমার ইউনিয়ন নয় প্রায় সবকটি ইউনিয়ন পরিষদের যেকোন কাজে সে সক্রিয় সহযোগিতা করে থাকে।” তিনি বলেন, “উপজেলা পরিষদের সিএ কনক দেব মিঠু একজন দক্ষ, কর্মঠ সরকারি কর্মচারী। তিনি তার কর্মের মাধ্যমে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজে সকলের প্রিয়মুখ হয়ে উঠেছেন। তার ব্যক্তিগত খ্যাতি অনেকেরই ঈর্শ্বার কারণ হয়ে উঠেছে, যা কাম্য নয়।” তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত হিংসা থেকেই একমহল মিঠু’র ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে একপেশে সংবাদ প্রচার করেছে। আমি এর তীব্র, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”