রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৬ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় চলমান গণটিকা কার্যক্রম টিকার সংকটের কারণে কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। ইতিমধ্যে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন, কিন্তু টিকা পাননি এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় পৌনে দুই কোটি। পর্যাপ্ত টিকা দেশে এলে পর্যায়ক্রমে তারা টিকা পাবেন।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো টিকাদান বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন তিন কোটি ৩২ লাখ ৩৬ হাজার ৭১০ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন এক কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭১২ জন। নিবন্ধন করেও টিকা পাননি এক কোটি ৭২ লাখ ৫৮ হাজার ৯৯৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশে এখন পর্যন্ত টিকা এসেছে তিন কোটি নয় লাখ ৪৩ হাজার ৭২০ ডোজ। এর মধ্যে দুই কোটি ২১ লাখ সাত হাজার ২৫২ ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে ৮৮ লাখ ৩৬ হাজার ৪৬৮ ডোজ টিকা মজুদ আছে।
প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৫৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭১২ জনকে। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৬১ লাখ ২৯ হাজার ৫৪০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, বুধবার অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ কেউ পাননি এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪০ হাজার ৫৫০ জন। এখন পর্যন্ত অ্যাস্ট্রাজেনেকা দেওয়া হয়েছে এক কোটি নয় লাখ ৩৬ হাজার ৬০৮ ডোজ। আজ ফাইজারের প্রথম ডোজও কাউকে দেওয়া হয়নি এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৭৩৬ জন। আর এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ৯২ হাজার ৫২৬ ডোজ।
এছাড়া এখন পর্যন্ত ৮৩ লাখ ৯১ হাজার ৮৮৪ ডোজ সিনোফার্মের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আজ প্রথম ডোজ নিয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ৫০১ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এক লাখ ১৪ হাজার ২৬৯ জন।
মডার্নার টিকা এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৪ ডোজ। এর মধ্যে আজ প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ২৫৭ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৪৩ হাজার ৭৮৯ জনকে।
এদিকে বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, কোভ্যাক্সসহ বিভিন্ন উৎস থেকে করোনাভাইরাসের ২১ কোটি ডোজ টিকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। তিনি জানান, এরই মধ্যে তিন কোটি ১০ লাখ ডোজ টিকা কেনা হয়েছে।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশে চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা বোতলজাতকরণ ও সরবরাহের জন্য ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন লিমিটেডের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই টিকার উৎপাদনও শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। তবে কিছু দিন চলার পর টিকা সংকটের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। মূলত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সঠিক সময়ে না পাওয়ার কারণে দেশে টিকার সংকট দেখা দেয়। দেশে এখন চারটি কোম্পানির কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক, মর্ডানা ও সিনোফার্মের টিকা।
সরকার বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। চলতি আগস্ট মাসে প্রায় এক কোটি টিকা আসার কথা রয়েছে। বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ প্রায় ছয় কোটি টিকা দেশে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকার দেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চায়।