শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

প্রস্তুত নারায়ণগঞ্জ, রাত পোহালেই ভোট

তরফ নিউজ ডেস্ক: ঢাকার পাশে গুরুত্বপূর্ণ সিটি করপোরেশন নারায়ণগঞ্জে রাত পোহালেই ভোট। আগামীকাল রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ করা হবে। ১৯২টি কেন্দ্রেই ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে। ইতিমধ্যে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রে কেন্দ্রে চলে গেছে ভোটের সরঞ্জাম। সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।

এই নির্বাচেন মেয়র পদে দলীয় ও স্বতন্ত্র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাতজন প্রার্থী। ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদ লড়ছেন ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসেবে আছেন ৩৪ জন।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা মার্কা), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি মার্কা), খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি মার্কা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা মার্কা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ মার্কা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি মার্কা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া মার্কা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে আইভী ও তৈমূরের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এবার জিতলে নারায়ণগঞ্জের মেয়র হিসেবে হ্যাটট্রিক করবেন আইভী। ২০১১ সালে শামীম ওসমানকে এক লাখের বেশি ভোটে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র হয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে বিএনপির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতকে পরাজিত করেন ৮০ হাজারের বেশি ভোটে। এছাড়া ২০০৩ সাল থেকে তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র।

অন্যদিকে তৈমূর আলম খন্দকার ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। পরে দলের নির্দেশে এক দিন আগে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। এবার দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেই তিনি ভোটে লড়ছেন। যদিও ভোটের কারণে তাকে হারাতে হয়েছে দলীয় সব পদ।

ভোটের প্রস্তুতি চূড়ান্ত

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে এটাই সর্বশেষ বড় কোনো নির্বাচন। এজন্য নারায়ণগঞ্জে মডেল নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে আলাদাভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই, সবগুলো কেন্দ্রকেই বিশেষ বিবেচনায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মাহফুজা বলেন, ‘এই নির্বাচনে পুলিশের ২৭টি ইউনিট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। এছাড়াও পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ৬৪টি, প্রতি টিমে সদস্য থাকবেন পাঁচজন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১৪ প্লাটুন সদস্য থাকবে।’ এছাড়া র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে তিনটি, চেকপোস্ট থাকবে ছয়টি, টহল টিম থাকবে সাতটি ও স্ট্যাটিক টিম থাকবে দুটি।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর (তৈমূর) কাছ থেকে লিখিত, ফোনে বা অন্য কোনো মাধ্যমে অভিযোগ পাইনি। আমরা নির্বাচনের রুটিন ওয়ার্ক করছি।

ডিসি বলেন, আমরা ভোটের সব সরঞ্জাম কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নয়টি টিম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন। আগামীকাল আরও ৩০ জন ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৩৯টি টিম কাজ করবে। এছাড়া পুলিশের ৭৬টি টিম ও র‌্যাবের ৬৫টি টিম মাঠে থাকবে। বিজিবির ১৪টি টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, আগামীকাল বিজিবির আরও ছয়টি দলসহ মোট ২০টি দল কাজ করবে। এর বাইরে আমাদের আরও ছয়জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। কেন্দ্রগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ এবং বিজিবি নিয়োজিত থাকবে।

জেলা প্রশাসক জানান, নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে এখন পর্যন্ত ২০০টি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া একজনকে কারাদণ্ড এবং লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com