বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

সেনাপ্রধানের ঐক্যের ডাকে ‘নেতাদের মুক্তি, জনরায়ের স্বীকৃতি’ দাবি ইমরানের দলের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এবং ইমরান খান উভয়ই পাল্টাপাল্টি জয় দাবির পর সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনীর দেশবাসীকে ‘নৈরাজ্য ও দলাদলি’ ত্যাগ করে ঐক্য গঠনের যে আহ্বান জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইমরানের দল পাকিস্তান-তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।

দলটি তাদের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানসহ অন্যান্য রাজবন্দিদেরও জেল থেকে মুক্তির পাশাপাশি ভোটে জনগণ পিটিআই-কে দেশ শাসনের যে রায় দিয়েছে, তাকে সম্মান জানিয়ে এর স্বীকৃতি দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে।

নির্বাচনের পর সম্প্রীতির পথে এটিই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন পিটিআই এর চেয়ারম্যান গহর খান। সেনাবাহিনী কেবল এই ‘আরোগ্যের পরশই’ এখন বুলিয়ে দিতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

শনিবার এক বিবৃতিতে জেনারেল মুনির ঐক্য ও স্বাভাবিকতার ডাক দেন। তিনি বলেন, জাতির দৃঢ় হাত দরকার এবং অরাজকতা ও মেরুকরণের রাজনীতি থেকে সরে আসতে ‘আরোগ্যের পরশ’ প্রয়োজন।

ভোটে কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনির সব দলকে ‘পরিপক্কতা এবং ঐক্য’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “২৫ কোটি মানুষের একটি প্রগতিশীল দেশে রাজনীতি নিয়ে দলাদলি সাজে না। তাই দলাদলি দূরে সরিয়ে রাখতে দেশে সুস্থির নেতৃত্ব প্রয়োজন, যার নেতৃত্বের ছোঁয়ায় সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।”

“নির্বাচনের অর্থ জয়-পরাজয়ের শূন্য-সমষ্টি নয় বরং জনগণের ম্যান্ডেট নির্ধারণের একটি মহড়া মাত্র। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মীদের নিজস্ব স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শাসনক্ষমতা পরিচালনাসহ জনগণের সেবা করতে হবে।”

পাকিস্তানের জিও নিউজ জানায়, সেনাপ্রধান মুনীরের বক্তব্যের জবাবে পিটিআই এর ব্যারিস্টার গহর বলেন, ‘আরোগ্যের পরশ’ মানেই দেশে কোনও রাজবন্দি থাকা উচিত হবে না। সেনাবাহিনীকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

আরব নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে গহর একথা বলেন। তার কথায় পিটিআই সামনে কোন পথে যাবে তার ইঙ্গিত আছে। তিনি বলেন, “পিটিআই-কে জনগণ যে রায় দিয়েছে তাকে সম্মান দেখাতে হবে। তা না হলে সেখানে কোনও ‘আরোগ্যর পরশ’ থাকতে পারে না।

সেনাপ্রধান মুনীরের ঐক্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে গহর বলেন, এর মানে যে একটি ঐক্য সরকারই হবে তা নয়। ঐক্য সরকার মানে প্রতিটি দলকে এক হতে হবে একটি বিষয়ে। আর তা হচ্ছে, প্রথমে আপনাদেরকে জনরায়কে সম্মান দেখাতে হবে।”

“যে রাজনীতিবিদরা এনএ-১০ আসন থেকে সাধারণ নির্বাচনে জিতেছে, জনগণ ভোটের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো কথা বলেছে। তারা খুবই কঠিন একটি পরিস্থিতির (পিটিআই এর ওপর দমনপীড়ন) মধ্যে তাদের রায় দিয়েছে,” বলেন তিনি।

নির্বাচনের তিন দিন পর পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে রোববার। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে ১০১টি আসনে জিতেছেন ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্যদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৫টি আসনে জয় পেয়েছে।

তাছাড়া, প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৫৪টি আসনে জয় পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আর মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) ১৭টি আসন জিতেছে।

পিটিআই চেয়ারম্যান গহর খান আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান মুক্তি পাবেন বলে আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করছি আমরা হাই কোর্টে যাব। খানের ওপর চাপানো দোষ একপাশে সরিয়ে রেখে তাকে দ্রুতই জেল থেকে বের করে আনা হবে।”

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com