শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে চিটাগংকে হারাল রাজশাহী

স্পোর্টস ডেস্ক : রান উৎসবের ম্যাচে দাপট দেখালেন ব্যাটসম্যানরা। তবে শেষ ওভারে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি পেসারের নৈপুণ্যে রোমাঞ্চকর ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসকে হারাল রাজশাহী কিংস।

বিপিএলে শনিবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ রানে জিতেছে রাজশাহী। ১৯৮ রান তাড়ায় ৮ উইকেটে ১৯১ রান করে চিটাগং।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহীকে ভালো শুরু এনে দেন সৌম্য ও চার্লস। শুরুতে দুইবার ক্যাচ হতে হতেও বেঁচে যাওয়া সৌম্য চতুর্থ ওভারে নাঈম হাসানকে হাঁকান তিনটি চার।

তবে এই মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেননি সৌম্য। খালেদ আহমেদকে ওড়ানোর চেষ্টায় ফিরে যান মুশফিকুর রহিমকে সহজ ক্যাচ দিয়ে। পাঁচ চারে রাজশাহীর বাঁহাতি ওপেনার ফিরে যান ২৬ রান করে।

ছন্দে থাকা লরি ইভান্স চার্লসের সঙ্গে গড়েন ৭০ রানের জুটি। খালেদের স্টাম্পের বেশ বাইরের বল তাড়ায় চেষ্টায় ইভান্স মোহাম্মদ শাহজাদের গ্লাভনবন্দি হলে ভাঙে জুটি। চারটি চারে ২৯ বলে ৩৬ রান করে বিদায় নেন ইভান্স।

পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর আবু জায়েদ চৌধুরীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান চার্লস। ক্যারিবিয়ান এই ওপেনার ৪৩ বলে পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় করেন ৫৫ রান।

নেমেই বোলারদের ওপর চড়াও হন ডেসকাট। তরুণ অফ স্পিনার নাঈমকে হাঁকান টানা তিন ছক্কা। রান আউট হয়ে থামেন চার ছক্কায় ১১ বলে ২৭ রান করা ডেসকাট।

রবিউল হকের বলে ব্যক্তিগত ৩ রানে সিকান্দার রাজার হাতে জীবন পাওয়া ক্রিস্টিয়ান ইয়ঙ্কার দলকে নিয়ে দুইশ রানের কাছে। শেষ ওভারে রবিউলকে পরপর দুটি ছক্কা হাঁকানোর পর আবার লং অফে আবার রাজার হাতে জীবন পান তিনি।

দুটি বিমার হয়ে যাওয়ায় সেই ওভারের মাঝপথে সরে যেতে হয় রবিউলকে। তার ওভারটি শেষ করা ক্যামেরন ডেলপোর্ট শেষ বলে তুলে নেন ইয়ঙ্কারের উইকেট। লং অফে মুশফিকের হাতে ধরা পড়া দক্ষিণ আফ্রিকান ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১৭ বলে তিন ছক্কা ও এক চারে করেন ৩৭ রান।

বড় রান তাড়ায় দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন মোহাম্মদ শাহজাদ। কামরুল ইসলাম রাব্বির করা প্রথম ওভারে তিন ছক্কা ও এক চারে তুলে নেন ২২ রান। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে মুস্তাফিজ কট বিহাইন্ড করে ডেলপোর্টকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন।

অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে বিপজ্জনক শাহজাদকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। অফ স্পিনারের ফুল লেংথ বল উড়ানোর চেষ্টায় সৌম্যর হাতে ধরা পড়েন ২২ বলে পাঁচ ছক্কা ও তিন চারে ৪৯ রান করা শাহজাদ।

কিপার ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর বোলারদের ওপর চড়াও হন ইয়াসির আলী চৌধুরী। সৌম্যকে ছক্কা-চার হাঁকানোর পর ছক্কায় ওড়ান আরফাত সানিকে। সৌম্যকে পরপর দুই চার হাঁকিয়ে ইয়াসির ৩১ বলে তুলে নেন টানা দ্বিতীয় ফিফটি।

বাঁহাতি স্পিনার সানি বোল্ড করে থামান ছন্দে থাকা ইয়াসিরকে। তরুণ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ৩৮ বলে খেলা ৫৮ রানের ইনিংসটি গড়া দুটি ছক্কা ও সাতটি চারে।

কামরুল ইসলাম রাব্বিকে স্লগ করে ছক্কা হাঁকনোর পর স্কুপ করতে গিয়ে মুমিনুল হকের ধরা পড়েন মুশফিকুর রহিম। ইয়াসির ও অধিনায়কের বিদায়ের পর মোসাদ্দেক হোসেন দ্রুত ফেরায় চাপে পড়ে যায় চিটাগং।

ফিল্ডিংয়ে অসংখ্য ভুল করা রাজা টিকিয়ে রাখেন দলের জয়ের আশা। মুস্তাফিজের করা শেষ ওভারে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। ১৫ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ২৯ রান করা রাজাকে ওভারের প্রথম বলে বোল্ড করেন রাজশাহীর বাঁহাতি পেসার।

সেই ওভারে ৫ রান দিয়ে দলকে দারুণ জয় এনে দেন মুস্তাফিজ। ১০ ম্যাচে পঞ্চম জয় পায় রাজশাহী। নয় ম্যাচে তৃতীয় হারের তেতো স্বাদ পায় চিটাগং।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী কিংস: ২০ ওভারে ১৯৮/৫ (চার্লস ৫৫, সৌম্য ২৬, ইভান্স ৩৬, ডেসকাট ২৭, ইয়ঙ্কার ৩৭, মাহমুদ ১*; আবু জায়েদ ৪-০-২৪-১, খালেদ ৪-০-৩২-২, নাঈম ৪-০-৪৪-০, রবিউল ৩.৩-০-৪৭-০, ডেলপোর্ট ৩.৩-০-৩৫-১, রাজা ১-০-১০-০)

চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৯১/৮ (শাহজাদ ৪৯, ডেলপোর্ট ৭, ইয়াসির ৫৮, মুশফিক ২২, মোসাদ্দেক ১, রাজা ২৯, জাদরান ১১, নাঈম ০*, রবিউল ৩, আবু জায়েদ ১*; রাব্বি ৪-০-৪৪-২, মিরাজ ৪-০-২৫-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২৮-৩, সানি ৪-০-৩৭-১, ডেসকাট ২-০-৩২-০, সৌম্য ২-০-২৩-০)

ফল: রাজশাহী কিংস ৭ রানে জয়ী

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com