রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮৭ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে শনিবার দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খায়রুল হুদা চপলকে। যিনি ২০১৭ সালে হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতর অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামী।
হাওর দুর্নীতি মামলার আসামীকে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেই চলছে আলোচনা সমালোচনা। এতে দল ও সরকারে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে বলেও মনে করেছেন অনেকে।
২০১৭ সালের সালের বাঁধের কাজে দুর্নীতি মামলার অনেক আসামীকে এবারও হাওরের বাঁধ নির্মাণের কমিটিগুলোতে রাখা হয়েছে। এনিয়ে সমালোচনার মুখেই আলোচিত সেই দুর্নীতি মামলার আরেক আসামীকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিলো আওয়ামী লীগ।
২০১৭ সালে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় হাওরের হাজার কোটি টাকার ফসল। এনিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় ওঠে। ব্যাপক সমালোচনার মুখে সে বছরের ২ জুলাই হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালনা কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে দায়েরকৃত মামলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৫ কর্মকর্তা ও বাঁধের কাজের ৪৬ জন ঠিকাদারকে আসামি করা হয়। এই ঠিকাদারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল।
মামলা দায়েরের পর ওই বছরের ১৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় তিন মাস কারাভোগের পর ওই বছরের নভেম্বরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
দুর্নীতি মামলার আসামী হওয়া সত্বেও দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রসঙ্গে খায়রুল হুদা চপল বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে ওই মামলায় আমার নাম যুক্ত করা হয়েছিলো। আমি এই দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত নই।
জনগন ভোটের মাধ্যমেই এই ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে বলেও মন্তব্য করেন খায়রুল হুদা।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলো জেলা আওয়ামী লীগ।
একক প্রার্থী বাছাই করতে ব্যর্থ হয়ে সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোবারক হোসেন, খায়রুল হুদা চপল, মনিশ কান্তি দে মিন্টু ও আসাদুজ্জামান সেন্টুর নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করে জেলা আওয়ামী লীগ। এদের মধ্যে থেকে শনিবার খায়রুল হুদা চপলকে চুড়ান্ত মনোনয়নের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, আমরা চারজনের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলাম। নামের সাথে তাদের বিস্তারিত তথ্যও কেন্দ্রে দিয়েছি। কিছু গোপন করিনি। এখন কেন্দ্র যাছাই-বাছাই করেই প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে। এতে আমাদের কিছু বলার নেই।
দুর্নীতি মামলার আসামীকে মনোনয়ন দেওয়ায় দলের ভেতরে ক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা স্থানীয় নির্বাচন। এরমধ্যে বিএনপিও নেই। ফলে আওয়ামী লীগের ভেতরেই কিছু ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতে পারে। তবে এগুলো বড় কিছু নয়।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে নাম ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরমধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার অন্য উপজেলাগুলোর মধ্যে জামালগঞ্জে মো. ইউসুফ আল আজাদ, শাল্লায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, বিশ্বম্ভরপুরে মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার, ধর্মপাশায় শামীম আহমেদ মুরাদ, ছাতকে মো. ফজলুর রহমান, দোয়ারাবাজারে আব্দুর রহিম, দিরাইয়ে প্রদীপ রায়, তাহিরপুরে করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবলু ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে মো. আবুল কালামকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।