শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

নিজের ফাঁসি চেয়ে ফেসবুকে আবেগময় স্ট্যাটাস দিলেন গৌরিপুরের নাজনীন

তরফ নিউজ ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ফাঁসি চাইলেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাজনীন আলম। শনিবার রাত ৭টা ১১ মিনিটে তিনি ফেসবুকে লিখেন ‘আমার ফাঁসি চাই’। কারণ হিসেবে ভুল ও অপরাধের ৯ শর্তের বর্ণনাও দেন তিনি। মুহূর্তেই  তার স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনে মনোনীত ৪৩ জনের তালিকা প্রকাশ করে দলটি। সেই তালিকায় নাম আসেনি নাজনীন আলমের। এতে ক্ষোভ, হতাশা ও কষ্ট নিয়ে নিজেই নিজের ফাঁসি দাবি করেন তিনি। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলে। নাজনীন আলম ফেসবুকে লিখেন, কেন হাই কমান্ডের আশ্বাসকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম? এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার প্রয়োজন কেন অনুভব করেছিলাম? এমপি/সিনিয়র কোনো নেতার পরিবারের সদস্য কেন আমি হলাম না? কেন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি পয়সা রোজগারের ধান্ধা করিনি? কেন দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে নিঃস্ব হতে গেলাম? কেন জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছিলাম? কেন তদ্বির/ তেলবাজি ঠিকমতো করতে পারলাম না? কেন সমর্থকদের বারবার কাঁদাচ্ছি? সম্ভবত এ সবই আমার ভুল/অপরাধ।

এজন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত।

নাজনীন আলম এর আগে উপনির্বাচন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন তিনি। পরবর্তীতে সংরক্ষিত আসনে এমপির মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

এ প্রসঙ্গে নাজনীন আলমের সঙ্গে সেলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার স্বামী ফেরদৌস আলম ফোন রিসিভ করে জানান, নাজনীন হাসপাতালে গেছেন। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় হাজারো নেতাকর্মী-সমর্থকদের বারবার আশাহতের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ‘আমার ফাঁসি চাই’ মর্মে ফেসবুক মন্তব্য তাদেরই উল্লেখ করে নাজনীনের স্বামী বলেন, ‘আপনারা জানেন আমার স্ত্রী ও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখদুঃখে মিশে আছি। দলের জন্য জীবনের যা অর্জন ছিল সব দিয়ে দিয়েছি। এরপরও আমরা কী পেলাম?’ ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম। সে নির্বাচনে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হন। সে সময় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির। স্বামী মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় বিদ্রোহী  প্রার্থী হন তার স্ত্রী নাজনীন আলম। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক।

সেই থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন নাজনীন আলম। ছুটে চলেন তৃণমূল মানুষের দ্বারপ্রান্তে। সেই নির্বাচনে নাজনীন আলমের হরিণ মার্কা পরাজিত হলেও নির্যাতন-নিপীড়নেও মাঠ ছাড়েননি। ‘হরিণ’ আখ্যায় নাজনীন সমর্থকদের অনেকেই হামলা-মামলার শিকার হন। জেলও খাটতে হয়েছে অনেককে। তাঁতী লীগ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনসহ নানা সংগঠনের ব্যানারে রাজনীতির মাঠে সেই সময় থেকে সরব ছিলেন নাজনীন আলম। সমর্থক ও দলীয় অসচ্ছল, ত্যাগী নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশেও দাঁড়ান তিনি। ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির প্রয়াত হওয়ার পর উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান। সেবারও মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মী ও হাইকমান্ডের চাপের মুখে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com