বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বামী শিবানন্দ। পাসপোর্ট অনুযায়ী তাঁর বয়স এখন ১২৩ বছর। জন্ম হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার হরিপুর গ্রামে। তবে দীর্ঘদিন ধরে ভারতেই বসবাস করছেন তিনি। এই ব্যক্তি সম্প্রতি বাংলাদেশে তাঁর জন্মস্থান সিলেট সফরে এসেছেন। এরই অংশ হিসেবে সিলেটের বিভিন্ন মন্দিরসহ নানা স্থান ভ্রমণ করছেন।
সিলেটের জামতলা এলাকার শ্রীশ্রী প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দর ধামে মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে স্বামী শিবানন্দ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। শ্রীচৈতন্য গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত এ সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনোজবিকাশ দেবরায়। এ ছাড়া শ্রীশ্রী প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দর ধামের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বন্ধুপ্রতিম ব্রহ্মচারী, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নিখিল ভট্টাচার্য্য এবং কলকাতার লেখক ও গবেষক অসীম কৃষ্ণ পাইন বক্তব্য দেন।
সভার আয়োজকদের দাবি, বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ হওয়া সত্ত্বেও প্রচারবিমুখ শিবানন্দ সব সময় থেকেছেন প্রচারের বাইরে। বিশ্বের বর্তমানে জীবিত মানুষের মধ্যে বয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড কিংবা অন্য কোনো রেকর্ডে নাম নেই তাঁর। এ সময় আয়োজকেরা শিবানন্দের বয়সের প্রমাণ হিসেবে দেখান ভারতীয় পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। যেখানে তাঁর জন্মসাল লেখা রয়েছে ১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট। ১৯০১ সালে তিনি ভারতের নবদ্বীপে স্থায়ীভাবে চলে যান। কর্মজীবন ভারতে হলেও তাঁর জন্ম বৃহত্তর সিলেটেই। শিক্ষাজীবনে কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে লন্ডন থেকে গ্র্যাজুয়েশন ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
নীরোগ ও দীর্ঘ আয়ুর রহস্য হিসেবে স্বামী শিবানন্দ জানান, তিনি নিয়মিত খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন এবং প্রতিদিনই যোগব্যায়াম করেন। ভাত, রুটি আর সেদ্ধ সবজি খান। নিয়মিত ডায়েটের পাশাপাশি তেল, চর্বি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার, ফল-দুধ খান না। এ কারণে তাঁর মধ্যে কোনো রোগ নেই, কামনা-বাসনা নেই, দুঃখ-চিন্তা-সমস্যা নেই। স্বামী শিবানন্দ বলেন, ‘সৎভাবনা, সৎকর্ম ও সৎচিন্তা থাকলে বিশ্বে হানাহানি আর সংঘাতের ঘটনা ঘটবে না। এতে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে।’
হিন্দু-মুসলিম কিংবা জাত-বর্ণের বাছ-বিচার করেন না জানিয়ে স্বামী শিবানন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলিমের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয়।’ বিশ্বে এত অশান্তি কেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের আয়ু অনেক কম, কিন্তু বাসনা অনেক বেশি। এ জন্যই আমাদের মধ্যে এত অশান্তি। তবে আমি আশাবাদী, পৃথিবী একদিন শান্তির নীড় হবে।’
সভার শেষে আয়োজকেরা দাবি জানান যেন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ হিসেবে স্বামী শিবানন্দের নাম বিশ্ব রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়।