বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাহুবলের নোয়াঐ গ্রামের একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়ার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের রাতে তার মৃত্যু হলে গতকাল বুধবার বিকাল ৩টায় নিজ গ্রামে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের দাবি নোয়াঐ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধিন ৪তলা ভবনটির নামকরণ যেন মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়ার নামে করা হয়।
বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি ১ ছেলে, ৩ মেয়ে ও ২ স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ৩ ও ৪নং সেক্টেরে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়ার নামাজে জানাযার পূর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের চৌকস দল পৃথক গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. আবুল হোসেন, ডেপুটি কমান্ডার মোঃ নূর মিয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশিম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক শামীনুর রহমান, আজাদ, হৃদয়, ইমরুল, পারুল, নূরুল হক ও শাবাজ মিয়াসহ প্রমুখ।
জানাযা পূর্বে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ডা. আবুল হোসেন বলেন, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়া ছিলেন একজন খাঁটি দেশ প্রেমিক। তিনি সবসময় দেশের উন্নয়নের কথা ভাবতেন। তিনি কোন অনুষ্ঠানে হাজির হলে তার হাতে থাকতো বাংলাদেশের লালসবুজ পতাকা। তিনি আরো বলেন, রাজা মিয়া জীবদ্ধশায় এলাকার উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। তিনি গত ৫ বছর সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী মাধ্যমে এলাকার এক কিলোমিটার রাস্তা, ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রীজ, দেড় কিলোমিটার পাকা সড়ক, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন, নলকূপ স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন এবং নোয়াঐ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একটি নতুন একাডেমিক ভবন মঞ্জুরী এনেছেন। আমরা উক্ত স্কুলের নির্মাণাধিন ৪তলা ভবনটি তার স্মৃতি রক্ষার্থে নামকরণের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তা তিনি নিহতের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকাহত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। শোকবার্তায় তিনি বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজা মিয়ার নামে স্থানীয় নোয়াঐ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধিন ৪তলা ভবনের নামকরণ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, রাজা মিয়া একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ছিলেন। যাকে আমি প্রতিটি অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা বহন করতে দেখেছি। ফলে তাকে আমি ‘পতাকাবাহক রাজা মিয়া’ হিসেবে অনেকে পরিচয় দিতে শুনেছি। আমি তাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গিয়ে, স্কুলের ভবন তার নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। শুনে অসুস্থ রাজা মিয়া হেঁসেছিলেন। এতে আমার মনে হয়েছে, তিনিও এটি চেয়েছিলেন। আমি চাই তার ইচ্ছাটা পূর্ণ হোক।