বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

সুদানে বশিরের ‘পতন’, রাস্তায় সামরিক বাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গণবিক্ষোভের মুখে সুদানে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের ‘পতন’ ঘটেছে। কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি ‘বিশেষ ঘোষণা’ আসছে জানানোর খানিকবাদে ‘পদত্যাগ’ করেছেন প্রেসিডেন্ট বশির। তিনি এখন ‘গৃহবন্দি’।

কয়েক সপ্তাহ ধরে তুমুল বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে বশিরের পদত্যাগের খবর আসে। এই খবরের সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী খার্তুমসহ প্রধান প্রধান সড়কে সামরিক বাহিনীর অবস্থানের কথা জানাচ্ছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। তারা বলছে, গৃহবন্দি করে বশিরের আগে নিরাপত্তারক্ষীদের সরিয়ে নতুন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। তাকে রাখা হয়েছে ‘কড়া নজরদারিতে’।

সংবাদমাধ্যমের খবর, রুটি ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে বশিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের হটাতে নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগের কারণে উল্টো এই বিক্ষোভ তার পতনের দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকদিন ধরেই সামরিক বাহিনীর মধ্যে কানাঘুষার খবর ছড়াচ্ছিল।

সিএনএন জানায়, সকালে কথিত মিলিটারি ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রচার করা হয়। সেখানে প্রেসিডেন্ট বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পদক্ষেপের কথা বলা হয়। এরপরই খার্তুমসহ প্রধান প্রধান সড়কে নেমে আসে সরকারবিরোধীরা। প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনের এলাকা এবং সেনাসদর দফতরের সামনেও অবস্থান নেয় বশিরবিরোধীরা।

অন্যদিকে সকালেই সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ‘বিশেষ ঘোষণা’র কথা বললেও এখন পর্যন্ত তারা স্পষ্ট কোনো বার্তা দেয়নি। চারদিকে ‘সামরিক অভ্যুত্থানে’র গুঞ্জন ছড়ানোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনসহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে সামরিক বাহিনীর গুনকীর্তন। আর রাস্তা, মোড় এবং সেতুগুলোতে সাঁজোয়া যান ও অস্ত্রশস্ত্রসহ অবস্থান নিতে দেখা গেছে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের।

দুপুরের দিকে সরকারি সংবাদ সংস্থা সুনা জানায়, সুদানিজ ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি সব রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হতে শুরু করেছে এই নির্দেশ।

সামরিক বাহিনীর ‘হস্তক্ষেপে’ বশিরের ‘পতন’ ঘটলেও সুদানের বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবীদের সংগঠন এসপিএ বলেছে, তারা চায় সামরিক বাহিনী যেন বেসামরিক অন্তর্বর্তী সরকারের হাতেই ক্ষমতা তুলে দেয়।

কয়েক দশক ধরে সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের আফ্রিকান দেশটি শাসন করে আসছিলেন বশির। দারফুরে যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার জন্য তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) অভিযোগ রয়েছে।

১৯৮৯ সালে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থাকাকালে বশির আল-ওমর ‘অভ্যুত্থান’ ঘটিয়ে তৎকালীন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল-মাহদীকে উৎখাত করেন। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেন তিনি। কয়েকবছর ধরে তার বিরুদ্ধে ‘সামরিক অভ্যুত্থান’ চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেসব উতরে ৩০ বছর ধরে দারিদ্র্যপীড়িত দেশটি চালিয়ে আসছেন তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com