বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বানিয়াচঙ্গে একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করলো গ্রাম্য মাতব্বররা

রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) থেকে : বানিয়াচংয়ে হত্যা মামলা তুলে না নেয়ায় বানিয়াচং সদর ১নং ইউনিয়নের দোকানটুলা মহল্লার মোতালিম মিয়ার পরিবারকে গ্রাম্য পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সমাজচ্যুত করে রায় দিয়েছেন ওই মহল্লার সর্দার বাচ্চু মিয়াসহ কতিপয় মাতব্বররা। এর প্রতিকার চেয়ে গতকাল বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন মোতালিম মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম।

অভিযোগে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালের মে মাসে ফাতেমা বেগমের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা মার্জিনা আক্তারকে হত্যা করে তার পার্শ্ববর্তী মতিন মিয়া গংরা। এই হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য মামলা চলমান থাকার কারণে বিবাদী পক্ষ তাকে মামলা প্রত্যাাহারের জন্য নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওই মহল্লার গ্রাম্য সর্দার বাচ্চু মিয়া ও পঞ্চায়েতের অন্যান্য মাতব্বররা তাদেও পক্ষ নিয়ে মামলাটি মিমাংসা করারা জন্য ফাতেমা বেগমকে চাপপ্রয়োগ করে আসছে। এতে তিনি রাজী না হওয়ায় গত মঙ্গলবার মহল্লার পঞ্চায়েত ডেকে তাকে সমাজচ্যুত করে রায় প্রদান করেন বাচ্চু মিয়াসহ মাতব্বররা। পাশাপাশি রায়ে উল্লেখ করেন যে,ফাতেমার পরিবারের সাথে যে কথাবার্তা বলবে তার দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। সাথে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে বলে পঞ্চায়েতে উপস্থিত লোকদের ও মহল্লাবাসীদের জানিয়ে দেয়া হয়। এই রায়ের ফলে বর্তমানে ফাতেমা বেগমের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে যাচ্ছেন। তার স্কুল পড়–য়ার কন্যার পড়ালেখা বিঘিœত হচ্ছে। রায়ের ফলে মহল্লায় বসবাস করাই মারাতœক সমস্যার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে ওই পবিারটির। সরেজমিনে ওই মহল্লায় গিয়ে এলাবাসীদের সাথে কথা বলে এর সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। এই বিষয়ে গ্রাম্য মাতব্বর বাচ্চু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি রাগান্বিত স্বরে কথে বলে জানান,আপনি যা ইচ্ছা তাই লেখেন কোনো সমস্যা নাই। এই রায় আমি একা দেইনি মহল্লাবাসীকে নিয়ে আমি রায় দিয়েছে। কথা হয় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বানিয়াচং শাখার সভাপতি সাংবাদিক মোশাহেদ মিয়ার সাথে। তিনি বলেন-বিষয়টি আমি শুনেছি। এইভাবে একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অধিকার কারো নেই। সমাজে বসবাস করার যে অধিকারটা সেটা যে কেউ ইচ্ছে করলেই করতে পারেনা। এটা সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন-গ্রাম্য মাতব্বররা সমাজচ্যুত করে রায় দিবে এ কাজ করার কোনো সুযোগ নাই। বর্তমানের আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়ে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নিব। এই ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com