শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৪ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক : মাত্র ৩১ বছর বয়সেই ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন জাতীয় দলের সাবেক পেসার নাজমুল হোসেন। চোট বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার ছোট্ট ক্যারিয়ারে। ফিট থাকা সময়েও যে দলে খুব বেশি নিয়মিত ছিলেন তা নয়। তবে ২ টেস্ট, ৩৪ ওয়ানডে ও ৪টি টি-টোয়েন্টি খেলা এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের অনেক স্মরণীয় ম্যাচের সারথি।
গেল বছর প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সর্বশেষ খেলতে দেখা গেছে তাকে। সেবার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন এই ডানহাতি পেসার। এ মৌসুমে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে যোগ দেন বোলিং কোচ হিসেবে। মঙ্গলবার লিগের শেষ দিন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে নাজমুল ঘোষণা দিলেন, মাঠের ক্রিকেটকে বিদায়ের। জানালেন এখন থেকে কোচিংয়েই দেখা যাবে তাকে।
বিদায় বেলায় নাজমুল যখন ফিরে তাকালের নিজের ছোট্ট ক্যারিয়ারের দিকে, বললেন তৃপ্তি নিয়েই শেষ করলেন তিনি। সাংবাদিকদের নাজমুল বলেন, ‘‘ওভার অল যদি খেলার দিক থেকে চিন্তা করেন, তাহলে কম খেলেছি। কিন্তু দলের সাথে ছিলাম প্রায় ১১ বছর। শেষের দুই বছর, ২০১৪’র পর থেকে আমি সব দিক থেকেই স্ট্রাগল করছিলাম। তখনই আমার মনে হয়েছিল লাকি না হলে আমার ফিরে আসা কঠিন হবে।’’
‘‘যখন ফিট ছিলাম তখনো আমি ইন অ্যান্ড আউট ছিলাম। আমি প্রথম টেস্ট খেলার পর সাত বছর পর দ্বিতীয় টেস্ট খেলেছি।’’
তারপরও নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে তৃপ্ত নাজমুল, ‘‘আমি নিজেকে ধন্য মনে করি, আকরাম ভাই, সুমন ভাই, উনাদের মত লিজেন্ডদের সাথে খেলতে পেরেছি। আমার যেই বয়স ছিল, মাশরাফি ভাই, সাকিব, তামিম, ওদের সাথে খেলতে পেরেছি। সব মিলিয়ে ক্রিকেট থেকে অনেক কিছু পেয়েছি।’’
অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয়ের একাদশে ছিলেন নাজমুল। সেই স্মৃতিগুলোর কথা টেনে নাজমুল বললেন, ‘‘বাংলাদেশ ভারতের সাথে প্রথম ওয়ানডে জিতেছে, সেই ম্যাচটা আমি খেলেছি। প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে, সেটা আমি খেলেছি। প্রথম শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি, সেটা আমি খেলেছি। এইগুলো চিন্তা করলে আমার মনে হয় আমি ভাগ্যবানই ছিলাম। ছোট ক্যারিয়ার, কিন্তু আমার প্রাপ্তি অনেক।’’
৩১ বছর বয়সেই ছাড়লেন ক্রিকেট। চাইলে পারতেন খেলাটা আরো কিছুদিন চালিয়ে নিতে। তবে নাজমুল জানালেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীমের মতো ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপ করেই ক্রিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাদের পরামর্শেই এখন মন দিতে চান কোচিংয়ে। নাজমুল চান, তার মতো কেউ যেন ঝড়ে না যায়। জাতীয় দলের বাইরের পেসারদের নিয়ে আলাদা করে কাজ করতে চান তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব মিলে ৫০ উইকেটে নাজমুলের। ২ টেস্টে ৫টি, ৩৮ ওয়ানডেতে ৪৪টি ও ৪ টি-টোয়েন্টিতে ১ উইকেট নিয়ে অবসরে গেলেন নাজমুল।
নাজমুল হোসেন হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মৃত মুক্তার হোসেন পুত্র। তার পিতার জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ছিলেন।