শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’

তরফ নিউজ ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মধুপুর আলোকদিয়া ইউনিয়নের উত্তর লাউফুলা গ্রাম। একবছর আগে স্থানীয়দের উদ্যোগে একটি বাজার বসানো হয়। সেই বাজারের নামকরণ করা হয় ‘খালেক বাজার’। বাজারটি অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু হঠাৎ করেই স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার হস্তক্ষেপে বাজারের নামকরণ করা হয় ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’। এরপর থেকেই বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে পুরো ইউনিয়নজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ এর সাইন বোর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে পুরো উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়। জহিরুল ইসলামের আইডিতে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিলে নানা মন্তব্যের ঝর ওঠে। কাজী আসাদুজামান আদর নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘এটা হতে পারে না, নিন্দা জানাই অবিলম্বে এই সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলা হোক। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে যত্রতত্র নাম ভাঙিয়ে নিজেদের সুবিধা আদায় করছে ছি.?’

সরজমিন গিয়ে জানা যায়, মধুপুরের আলোকদিয়া ইউনিয়নের উত্তর লাউফুলা গ্রামের বেশিভাগ মানুষ আনারস চাষ করে। প্রতিদিন সকাল বেলায় এ গ্রামে কাঁচাবাজার বসে। একবছর ধরে চলে এ বাজারটি। প্রথমে বাজারটি বসানোর উদ্যোগ নেন আব্দুল খালেক নামের এক ব্যক্তি। কিছুদিনের মধ্যে বাজারটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সবার কাছে। জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর আব্দুল খালেক তার নিজের নামটি প্রচার করে বাজারের নামকরণ করেন ‘আব্দুল খালেক বাজার’। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু দিন না যেতেই একই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বাজারের নাম পরিবর্তন করে ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ রাখেন। এ নামকরণ নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ নামকরণের পর থেকেই বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রতিদিন বাজার না বসলেও নামকরণের সাইনবোর্ড টানিয়ে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে উত্তর লাউফুলা গ্রামের বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন জানান, কয়েকটি গ্রাম নিয়ে এ বাজারটি বসানো হয়েছিল। প্রথম অবস্থায় বাজারের নাম ছিল ‘খালেক বাজার’। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছু আওয়ামী লীগের নেতা নাম পরিবর্তন করে ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ করেন। একই গ্রামের জয়নাল জানান, প্রতিদিন সকালে কাঁচাবাজার বসতো এখানে। কয়েকটি গ্রাম মিলে আমরা এ বাজারটি বসিয়েছি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড নামকরণের পর থেকে বাজারটি আমরা বন্ধ করে দেই।

আলোকদিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেন। তাই তিনি এ বাজারটি ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ নামকরণ করেছেন।
আলোকদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি শুনেছেন ঢাকা থেকে একজন এসে তার নামে বাজার করেছিল তো, তাই পরিবর্তন করা হয়েছে।
আলোকদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এ ধরনের কোনো নাম দিয়ে বাজারের নামকরণ করাটা সমীচীন নয়। এতে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

তথ্য সূত্র : মানবজমিন

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com