শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : কৈলাশটিলা-১, রশিদপুর-২ ও রশিদপুর-৬ এ তিনটি কূপ খনন কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। খনন কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। এর মধ্য কৈলাশটিলা-১ কূপে গ্যাস পাওয়া গেছে। ৩৮ কোটির বেশি টাকা খরচে খনন করা এ কূপ থেকে ইতোমধ্যে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর থেকে।
তবে রশিদপুর-২ ও রশিদপুর-৬ কূপ দুটিতে গ্যাস পাওয়া যায়নি। ফলে গত ৩১ মার্চ এ তিন কূপ খনন কাজের সমাপ্ত ঘোষণা করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ তৈল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)।
‘সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) তিনটি কূপ (কৈলাশটিলা-১, রশিদপুর-২ ও রশিদপুর-৬) ওয়ার্কওভার’ শিরোনামে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১৩৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। তিনটির বদলে এক কূপ খনন করায় আনুমানিক ৩৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে সম্প্রতি জাগো নিউজকে জানান এ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম আলমগীর আজাদ। তিনি বলেন, ‘ফাইনাল অ্যাকাউন্ট (চূড়ান্ত হিসাব) এখনও হয় নাই।’
খনন কাজ বন্ধের বিষয়ে আলমগীর আজাদ বলেন, ‘রশিদপুর-২ ও রশিদপুর-৬ কূপে প্রসপেক্ট নাই। এর মানে ওখানে কোনো গ্যাস পাওয়া যাবে না। এ জন্য আমরা আর খনন করব না।’
’৩১ মার্চ এ প্রকল্প শেষ হয়ে গেছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন ৩১ মার্চ পরবর্তী আগামী তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে। আমরা কাজ করতেছি, শেষ হলে দিয়ে দেব,’ যোগ করেন এ প্রকল্প পরিচালক।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, কৈলাশটিলা-১ কূপ থেকে ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর থেকে কেটিএল গ্যাস ফিল্ডের প্রসেস প্ল্যান্টের মাধ্যমে দৈনিক ১০ এমএমসিএফ হারে গ্যাস জেজিটিডিএসএল-এ সরবরাহ করা হচ্ছে।
আলমগীর আজাদ বলেন, ‘ডিডিপিতে যেটা উল্লেখ ছিল ১০ মিলিয়ন, সেই হারেই উৎপাদন শুরু হয়েছে নভেম্বর মাস থেকে। তবে কতদিন এ উৎপাদন চলমান থাকবে, সেটা বলা মুশকিল। যদি পানি আসে, তাহলে তো তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দিতে হবে। যদি লবণ আসে, স্যালাইন ওয়াটার আসে তাহলে তো চালানো যাবে না। প্ল্যান্ট নষ্ট হয়ে যাবে। এ রকম অনেক বিষয় থাকে। এখন এটা বলা তো একটু কষ্টকর।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘গ্যাস আছে কি নাই, সেটা কূপ খনন না করা পর্যন্ত কখনোই জানা যাবে না। এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে যেখানে-সেখানে খনন করবে না, সেটাও ঠিক। কিছু লক্ষণ আছে, সে সব দেখে খনন করতে হয়। খনন করলেই যে ত্যাগ বা গ্যাস পাওয়া যাবে, সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভূ-তাত্ত্বিকরা যদি বলেন, এখানে আরও পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাহলে আমাদের আরও খনন করতে হবে। খনন করে করে একটা সময় যদি মনে হয়, আর খনন করে লাভ নেই। তখন খনন কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। তবে এখন আপাতত সেই কথা বলার সময় আসেনি।’
এ সহযোগী অধ্যাপক আরও বলেন, ‘গ্যাসের উৎপাদন যদি কমে যায় আস্তে আস্তে, আর নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্র না পাওয়া যায়, তাহলে তো বাইরে থেকে আমদানি করতে হবে।’
‘আর পাঁচটা জিনিসের মতো এটাও তো সীমিত। মাটির নিচে এগুলো তো অফুরন্ত বা অসীম আকারে থাকে না। শেষ হবে একদিন,’ যোগ করেন মাহবুবুর রহমান।