বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

টিকে থাকার লড়াইয়ে টাইগারদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান

তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট ঝুলিতে পুরেছে বাংলাদেশ। শেষ চারে খেলতে হলে বাকি তিন ম্যাচে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। এমন কঠিন সমীকরণ নিয়েই ধ্বংসস্তুপে দাঁড়ানো অদম্য স্পৃহার ফিনিক্স পাখি, মানে আফগানিস্তানের সাথে এবার লড়বে লাল-সবুজের টাইগাররা।

সোমবার (২৪ জুন) সাউদাম্পটনে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটিকে দারুণ উজ্জীবিত বাংলাদেশ মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছে না। স্বভাবতই ঘুরেফিরে আসছে আফগানদের মূলশক্তি স্পিন ত্রয়ীর কথা। তবে রশিদ খান, মুজিব-উর রহমান ও মোহাম্মদ নবীদের নিয়ে গড়া প্রতিপক্ষের স্পিন আক্রমণ লাল-সবুজ জার্সিধারীদের বুকে খুব বেশি কাঁপন ধরাতে পারছে না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে কয়েকজন বিশ্বমানের স্পিনার আছে। তবে তাতে চিন্তার কিছু নেই। ব্যাট হাতে ছন্দে থাকলে যেকোনো বোলারকেই সামলানো যায়। আমরা স্পিন ভালো খেলি। ব্যাট হাতে ছন্দে থাকলে পেস-স্পিন উভয়ের সঙ্গে এডজাস্ট করা যায়। সুতরাং খুব বেশি সমস্যা হবে বলে আমার মনে হয় না।

ম্যাচটিকে মোটেও হালকাভাবে নিচ্ছে না দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তিনি বলেন, প্রতিটি ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সাফল্য পেতে হলে প্রতিটি ম্যাচেই খেলোয়াড়দের শতভাগ দিয়ে খেলতে হবে, কাউকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিপক্ষ যে দলই থাকুক না কেন, সবার বিপক্ষেই খেলতে হবে। আমাদের প্রস্তুতিটা যথেষ্ট ভালো।

এদিকে পিঠের ব্যথার কারণে গত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে পারেননি তরুণ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ব্যথা সেরে না ওঠায় চলমান বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে খেলাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। ডানহাতি পেসার সাইফউদ্দিন চলমান বিশ্বকাপে দারুণ খেলে ৯ উইকেট শিকার করে নিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তার অনুপস্থিতি দলকে বেশ ভুগিয়েছিল। আর ইনজুরির কারণে অজিদের বিপক্ষে খেলতে না পারা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে দেখা যেতে পারে আগামী ম্যাচের একাদশে। অন্যদিকে অনুশলীন সেশনে মাথায় বলের আঘাত পেলেও স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানায় বিসিবি।

এ ম্যাচে সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি রেকর্ডের। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে শুধুমাত্র অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে নেমে আর মাত্র ২টি উইকেট সংগ্রহ করতে পারলেই ক্যাপ্টেন হিসেবে উইকেটের সেঞ্চুরি করবেন নড়াইল এক্সপ্রেস খ্যাত সবার প্রিয় মাশরাফি বিন মুর্তজা। আসরে ৫ ম্যাচে ৪২৫ রান নিয়ে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের ৬ ম্যাচের ৪৪৭ রানকে পেছনে ফেললে আবারো এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের খাতায় নাম ওঠাবেন সাকিব আল হাসান। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকার ১১ ম্যাচে করা ৬৭৩ রান ভাঙার সুযোগও আছে তার। কেননা তিনটি বিশ্বকাপ কেটে গেলেও শচীনের এক বিশ্বকাপে সর্বাধিক রানের রেকর্ডটি ভাঙ্গতে পারেননি কেউ।

অন্যদিকে ভারতের সাথে ম্যাচ হারের পর প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গেছে আফগানিস্তানের। তবে সাউদাম্পটনে ভারতের সাথে তার চেয়ে বড় যে অঘটনের জন্ম সেদিন নিতে যাচ্ছিল, শেষটা ভালো না করার জন্য তার পুনরাবৃত্তি অবশ্যই করতে চাইবে আফগানরা। আর সেই অঘটনের জায়গা থেকে ফিরে এসে নিজেদের সামনের দিকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, মাশরাফি বাহিনীর দিকে তাকিয়ে তাই দেখবে পুরো বিশ্ব।

আংশিক রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়ায় সাউদাম্পটনের শুকনো পিচ থাকবে স্পিনারদের পক্ষে। আর সেই পিচ এখন পর্যন্ত সাতবার দেখা হওয়া দু’দলকেই দেবে সমান সুযোগ। যদিও দুই দলের মুখোমুখিতে বাংলাদেশ জিতেছে চারটি ম্যাচ আর আফগানরা তিনটি, তবু পরিসংখ্যানের হিসেব বাদ দিয়ে এখন মাঠের খেলাতেই নজর রাখবে শেষ সময়টা ভালো কাটাতে চাওয়া ফিনিক্স পাখি আর সেমিতে উঠতে চাওয়া টাইগারদের দল।

বাংলাদেশ স্কোয়াড: মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, আবু জায়েদ রাহি, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

আফগানিস্তান স্কোয়াড: গুলবাদীন নাঈব (অধিনায়ক), ইকরাম আলী খিল (উইকেটরক্ষক) নুর আলী জাদরান, হযরতউল্লাহ জাজাই, রহমত শাহ, আসগর আফগান, হাশমতউল্লাহ শহিদী, নাজিবুল্লাহ জাদরান, সামিউল্লাহ শিনওয়ারী, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, দাওলাত জাদরান, আফতাব আলম, হামিদ হাসান, মুজিব উর রহমান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com