মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ অপরাহ্ন

রিফাত হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি নয়ন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

তরফ নিউজ ডেস্ক : প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

মঙ্গলবার (০২ জুলাই) ভোরে সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধ হয়। বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন।

তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি চাপাতি, একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নয়ন বন্ডের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে সোমবার (০১ জুলাই) সন্ধ্যায় মামলার এজাহারভুক্ত ১১ নম্বর আসামি অলি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা অভিযুক্ত তানভীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া, নাজমুল হাসান, সাগর ও সাইমুন নামে অপর তিনজন বর্তমানে পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন। এদিকে মামলার ১২ নম্বর আসামি টিকটক হৃদয় গ্রেফতার হলেও তিনি বরগুনা জেলা পুলিশের কাছে পৌঁছায়নি।

গত ২৬ জুন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে সন্ত্রাসীরা স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রিফাত শরীফকে। পরে বিকেলে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে প্রতিবাদ-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জন নামভুক্ত আসামি ছাড়াও আরও অজ্ঞাত ছয়-সাত জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ জানান, দুই মাস আগে রিফাত পুলিশ লাইন এলাকার কিশোরের মেয়ে আয়শা আক্তার মিন্নিকে বিয়ে করে। নিজের সাবেক স্ত্রী দাবি করে পশ্চিম কলেজ সড়কের নয়ন নামে এক যুবক প্রায়ই মিন্নিকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে ফেসবুকে আপত্তিকর ছবিও পোস্ট করে সে। এ নিয়ে রিফাতের সঙ্গে নয়নের বিরোধিতা তৈরি হয়। এর জেরে সকালে রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। এ সময় নয়নের সঙ্গে রিশান ফরাজী ও রাব্বি আকন নামে তার দুই সহযোগীও ছিলো।

জানা যায়, রিফাতের হত্যা মামলার প্রধান আসামি অভিযুক্ত নয়ন এক সময় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। ২০১১ সালে বরগুনা জিলা স্কুল থেকে তারা এসএসসি পাস করেন।

এরপর ২০১২ সালে প্রায় ১২ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য নিয়ে প্রশাসনের হাতে ধরা পড়ে নয়ন। বর্তমানে বরগুনা থানাসহ বিভিন্ন থানায় নয়নের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

রিফাত হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- সাব্বির আহমেদ নয়ন বন্ড (২৫), রিফাত ফরাজী (২৩), রিশান ফরাজী (২০), চন্দন (২১), মুসা, রাব্বি আকন (১৯), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রায়হান (১৯), হাসান (১৯), রিফাত (২০), অলি (২২) ও টিকটক হৃদয় (২১)।

জানা যায়-এ হত্যা মামলায় জড়িত থাকায় রিফাত জিরো জিরো সেভেন  গ্রুপের সদস্য মো. সাগর পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পায়নি। রোববার (৩০ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা দিতে যাওয়ার পর বরগুনা পুলিশ লাইনস্ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নিয়মানুযায়ী সাগর ফৌজদারী মামলার আসামি হওয়ায় তার নিয়োগ আপনা আপনি বাতিল হয়ে গেছে। পুলিশে তার চাকরি করার সুযোগ নেই।

বরগুনা সদর উপজেলার ৯নং ইউনিয়নের এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল লতিফ মাস্টারের ছেলে।

রিফাতের স্ত্রী আয়মা সিদ্দীকা মিন্নি জানায় ‘নয়ন প্রায়ই তাকে হুমকি দিতো, কলেজে গেলে বিরক্ত করতো, পরে বাধ্য হয়ে তিনি ফ্যামিলির সঙ্গে এগুলো বলেন। এ কারণে রিফাত শরীফের সঙ্গে পরিবরের পক্ষ থেকে তার  বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ে হবার পরও নয়ন ডিস্টার্ব করতো, সে কথা রিফাতকে জানালে ওদের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়।

তথ্য সূত্র : বাংলানিউজ২৪

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com