রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন

সিলেটে লন্ডনী কনে সেজে শিউলির প্রতারণায় দিশেহারা হারুন

নিজস্ব সংবাদদাতা : সিলেটে লন্ডনী কনে বিয়ে করতে গিয়ে এক প্রতারক চক্রের প্রতারণার ফাঁদে পরে সর্বস্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা হারুন মিয়া। তিনি দক্ষিন সুরমার মোল্লার ইউনিয়নের বেটুয়ার মুখ গ্রামের ময়না মিয়া ছেলে। লন্ডনী কনে বিয়ে করে প্রবাসে পারি জমানোর আশা ছিলো তার। দক্ষিণ সুরমার এক ঘটকের (দালালের) খপ্পরে পরে তড়িঘড়ি করে পহেলা এপ্রিল মঙ্গলবার সানিয়া (ছদ্মনাম) নামে এক লন্ডনী কনে দেখতে হারুন মিয়া ও তার পিতা ময়না মিয়া যান নগরীর উপশহরের একটি বাসায়। প্রথম দেখায় হারুনের পছন্দ হয় কনেকে। চলে আলাপ-আলোচনা। দালালের মাধ্যমে দেখানো হয় কনের বৃটিশ পাসপোর্ট। লোভে পরে ওইদিনই হারুন মিয়া ও তার পিতা ময়না মিয়া সেই বাসায় কন্যার সাথে আংটি রদবদল ও বিয়ে ঠিক করেন। ৫ এপ্রিল শুক্রবার বিয়ে হবে নগরীর জেল রোডস্থ একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। বিয়ে হবে সেই আশায় দালালের কিছু শর্তে পরের দিন বুধবার বিয়ের জন্য ঘটকের ঘটকালি অগ্রিম বাবৎ ১ লক্ষ টাকা দেন। সাথে কনেকে সেই বাসায় দিয়ে আসেন ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার। কনের মামার শর্ত ছিলো- বিয়ে হবে গোপণে, স্থানীয় কোনো চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এবং রেস্টুরেন্টের খাবার আর হলরুম ভাড়া দিবে কনে পক্ষ। কারণ সিলেট শহরে তাদের অনেক দুশমন রয়েছে, তাই বিয়ের বিষয়টি নিজের পরিবারের লোক ছাড়া কেউ যেনো না জানে। পরে কনে বিদেশে ফিরে গেলে সবাইকে জানানোর। বিয়ে করে লন্ডনী বধূকে ঘরে তুলার জন্য সব আয়োজন করেছিলেন হারুনের পরিবার। তাই শুক্রবার বিয়ে করতে ঘটককের (দালালের) কথামতো বর সেজে ৪০জন বরযাত্রী নিয়ে গিয়েছিলেন নগরীর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। সেখানে গিয়ে কনে পক্ষের কারো দেখা মিলেনি। ঘটকের (দালালের) ও কনেরও মোবাইল ফোনে কল করেন ময়না মিয়া। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। অপেক্ষা করেন কনে পক্ষ আসবে। কিন্তু কেউ আসেনি! পরে কনের উপশহরের সেই বাসায় গিয়েও কনে পক্ষের কাউকেই খোঁজে পাওয়া যায়নি। তখন বরের পরিবার বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। বিষয়টি জানাজানির কারণে বরের পরিবারের লোক এই ভুয়া লন্ডনী কনের প্রতারণার জন্য সমাজে আজ মুখ তুলে কথা বলতে পারছেন না। আড়ালে সবাই তাদের নিয়ে হাসাহাসি করে। এরকম হারুন মিয়া ও ময়না মিয়ার মতো সিলেটে অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন কথিত এসকল ভুয়া লন্ডনী সানিয়ার কাছে। গত সোমবার নিউজ মিরর-এর কাছে আসে একটি ছবি। সেই ছবির সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নামে নিউজ মিরর। সন্ধান মিলে সেই প্রতারক ভুয়া লন্ডনী কনে সানিয়া ও তার চক্রের। কে এই সানিয়া? সানিয়া তার ছদ্মনাম। তার আরো অনেক নাম আছে। এই নামটি তিনি ব্যবহার করেন প্রতারণার ক্ষেত্রে। তার আসল নাম শিউলি আক্তার। তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদিকা ও সিলেট মহানগরের সভাপতি। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কুনারই গ্রামের মৃত তৌহিদ উল্লাহর মেয়ে। তার বর্তমানে নগরীর উপশহরের গার্ডেন টাউয়ারের ৮ তলার ৪০৮৬ নং ফ্লাটে বসবাস করেন। প্রভাবশালীদের যোগসাজশে নারী নেত্রী শিউলি আক্তার প্রতারণার অভিযোগের পাহাড় গড়েছেন। মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, ফ্লাটে দেহ ব্যবসা, হুমকি, লন্ডনী কনে সেজে প্রতারণার ভিডিওসহ অসংখ্য অভিযোগের প্রমানাদি রয়েছে নিউজ মিরর কর্তৃপক্ষের কাছে। পর্যায়ক্রমে তা প্রকাশ করা হবে। এবার ফিরে আসা যাক হারুন মিয়ার ঘটনায় : ভুয়া লন্ডনী কন্যাকে এখন নিঃস্ব হারুন মিয়ার পরিবার। বিষয়টি জানাজানির কারণে হারুন মিয়ার পরিবারের লোকদের নিয়ে আড়ালে সবাই হাসাহাসি করে। জমি বন্ধক করে আনা ১ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ সবকিছু নিয়ে কথিত এই লন্ডনি কন্যা শিউলি আক্তার ও তার চক্র পালিয়ে যায়। এব্যপারে জাতীয় মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদিকা ও সিলেট মহানগরের সভাপতি শিউলি আক্তারের মুঠোফোনে ০১৭০৬৩৮××৫৩-তে একাধিকবার কল করলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com