বুধবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১০ অপরাহ্ন

আ’লীগের বিজয় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে : নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

তরফ নিউজ ডেস্ক: জাপান ভিত্তিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক জার্নাল নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ বাংলাদেশ বিষয়ে এক বিস্তারিত সমীক্ষায় বাংলাদেশের অর্থনীতির উত্তরোত্তর উত্থান ঘটছে উল্লেখ করে বলেছে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিজয় হলে উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

নিক্কেই এশিয়ান রিভিউর আজ ‘বাংলাদেশের উত্তরোত্তর উত্থান’ শীর্ষক এক প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে এ অভিমত দিয়েছে। জার্নালটির এডিটর এ্যাট লার্জ গোয়েন রবিনসন লিখিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, অপেক্ষাকৃত কম আন্তর্জাতিক মনোযোগ পেলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যও বিশ্বের অন্যতম সাফল্য গাথায় পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পর পর দুইবার ক্ষমতায় থাকার কারণে ভোটারদের মধ্যে কিছুটা ক্ষমতাসীনের বিরোধিতা থাকলেও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে অনেকেই একমত যে ক্ষমতাসীন দল বিজয়ী হলে অধিকতর উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এবং ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হলে বাংলাদেশ এক দীর্ঘমেয়াদি আকর্ষণীয় সাফল্য গাথা রচনা করবে। এ বছরের গোড়ার দিকে বাংলাদেশ ২০২৪ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করায় দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।

চলতি ডিসেম্বর মাসে নিক্কেই এশিয়ান জার্নালকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এলডিসি থেকে বের হয়ে আসা আমাদের এক ধরনের শক্তি ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে, যা শুধু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ নয় দেশের মানুষের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শেখ হাসিনা বলেন, এলডিসিভুক্ত থাকলে আপনাকে অপরের দয়ার ওপর নির্ভর করতে হয়। আর সেখান থেকে উত্তরণ ঘটলে আপনাকে আর কারো ওপর নির্ভর করতে হয় না। কারণ তখন আপনার নিজের অধিকার রয়েছে।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুধু অব্যাহত নয় আরো গতিশীল হবে উল্লেখ করে বলেন, আগামী পাঁচ বছরে আমরা নয় শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আশা করছি এবং ২০২১ সাল নাগাদ তা ১০ শতাংশ ছুঁবে বলেও আশা রাখছি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্প বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে। গত এক দশক ধরে দেশটি গড়ে ছয় শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং এ বছর ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ২০০৯ এর পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের মাথা পিছু আয় তিন গুণ বেড়েছে যা বর্তমানে এক হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া অতি দরিদ্রের হার ১৯ শতাংশ থেকে নয় শতাংশে নেমে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংরাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্য এমনকি সরকারি টার্গেটও ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর বাংরাদেশের রফতানির পরিমাণ রেকর্ড ৩৬.৭ বিলিয়নে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সাল স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে এটিকে ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে শিল্প খাতকে আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের কারণে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠছে। ২০১৮ সালে এটি ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশ আইটি খাত ছোট হলেও বর্তমানে উদীয়মান একটি খাত। প্রতিবেশী ভারতের সাথে এ কারণেই বাংলাদেশ এখন এই খাত নিয়ে বলিষ্ঠভাবে কথা বলতে পারে। ওষুধ তৈরিতেও বাংলাদেশের গতি ঊর্ধ্বমুখী।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সারা দেশে ১০০টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলছে। এর মধ্যে ১১টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৭৯টির কাজ বাস্তবায়নাধীন।

সরকারি বাসভবনে এই আলাপের সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কর্তৃত্ববাদের সমালোচনা প্রত্যাখান করে বলেন, ‘তাঁর দল বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ।’

শেখ হাসিনা দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ১০ বছর আগের সাড়ে সাত বিলিয়ন থেকে ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজস্ব সম্পদ তহবিল গড়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, যাতে আমরা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে অর্থায়ন করতে পারি।’

তথ্যসূত্র: বাসস

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com