বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কবরস্থান নিয়ে বিরোধ; হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত মিরপুর দি হোপ স্কুলে শিক্ষার মানোন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন চেয়েছেন ড. ইউনূস ধান ক্ষেত থেকে অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার জমি নিয়ে বিরোধ; দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত দোকান বাকীর টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : বৃদ্ধ নিহত হবিগঞ্জে হত্যা মামলা, আ.লীগ সভাপতিসহ ২শ জন আসামি গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে শামীম ওসমান লুকিয়ে থাকার গুঞ্জন, তাল্লাশি শেষে যা বলছে পুলিশ নগদ দুই লাখ টাকার বেশি তোলা যাবে না এ সপ্তাহে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সারাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর

অনলাইন ক্লাস এবং পাঠদানের ভিডিও নিয়ে ভাবনা

মোহাম্মদ আবদুর রউফ : অনলাইনে লাইভ ক্লাস করা কিংবা ভিডিও করা পাঠ পরবর্তীতে দেখার জন্য স্মার্ট ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সংযোগ (ওয়াই ফাই অথবা মোবাইল ডাটা) আবশ্যক। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পরিবারেই স্মার্ট ফোন। আর যাদের আছে ৫০০ উপজেলা সদর বাদ দিলে গ্রামে নেটওয়ার্ক খুবই দূর্বল। সেখানে ভিডিও স্ট্রিমিং চিন্তাই করা যায়না। সেক্ষেত্রে সকল মোবাইল অপারেটরের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হওয়া জরুরী।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ডাটার চড়া মূল্য। সপ্তাহের জন্য ১০০ টাকার নিচে কোনো প্যাক নেই। যেগুলো আছে সেগুলো দিয়ে ভিডিও দেখা বা অনলাইন ক্লাস করা কোনোটাই সম্ভব নয়। গ্রামে যাদের স্মার্ট ফোন রয়েছে তারা ২৫ এমবি আর ৫০ এমবি-র ডাটা কার্ড কিনে ব্যবহার করে। তাদের কাছে ১ জিবি ডাটা কেনা স্বপ্নের ব্যাপার। ডাটার মূল্য সহনীয় পর্যায়ে না আসলে এত কষ্ট করে ক্লাস নেয়া কিংবা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা এর কোনোটাই সফল হবে না।

প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে অন্তত দুই শতাধিক বই রয়েছে। এই বইগুলোতে রয়েছে হাজার হাজার অধ্যায়। অধ্যায়ে আবার বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। কোন অধ্যায় পাঠদান করতে হবে, কোন অধ্যায় থেকে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে সে সর্ম্পকে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই, রুটিন নেই, প্ল্যান নেই। যার যেখান থেকে ইচ্ছে, যে বিষয়ে ইচ্ছে পাঠদান করছেন। তাছাড়া হাজার হাজার ক্লাস তৈরি করা, সময় নিয়ে দেখা, এগুলোর জন্য ডাটা খরচ করা কোনোটাই সাধ্যের ভেতরে নয়।

আরেকটি বিরূপ প্রভাব হলো শিশুদের যেখানে আমরা ডিভাইস থেকে দূরে রাখতে চাই সেখানে এখন বাধ্য হয়ে তাদের হাতে আমরা ডিভাইস তুলে দিচ্ছি তাও আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ। এতে করে তাদের আসক্তি তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে ভালো কনটেন্টের পাশাপাশি খারাপ কনটেন্টও সামনে চলে আসে অথবা খুঁজে পাওয়া যায়। এডাল্ট ভিডিও, এডাল্ট বিজ্ঞাপন এগুলো ভিন্ন প্রভাব ফেলবে শিশুদের মনে। বিশেষ করে বয়:সন্ধি পার হওয়া ছেলে মেয়েদের। এটা রোধ করার উপায় খুব একটা নেই। তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু এ বিষয়ে কতজন অভিভাবক সচেতন? তারা তো মনে করতেই পারেন আমার সন্তান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পড়ালেখা করছে।

তবে আশার কথা হলো এই ক্লাস নেওয়া কিংবা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করার মাধ্যমে আমরা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছি। শিক্ষকগণ একজন আরেকজনের ক্লাস দেখছেন, নিজেরটার সাথে তুলনা করছেন, নতুন নতুন আইডিয়া গ্রহণ করছেন, নিজের উপস্থাপনার উন্নতি ঘটাচ্ছেন এটাও এক ধরনের লাভ। তাই আমি এর বিপক্ষে নই।

টেলিভিশন, রেডিও, কমিউনিটি রেডিও, এফএম রেডিও, মোবাইল ফোন প্রত্যেকটি মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানের চেষ্টা করছি। কোনো একটা মাধ্যমও যদি কোনো শিক্ষার্থী ব্যবহার করে তাহলে সে হয়তো পড়ার জগৎ থেকে হারিয়ে যাবেনা।

স্বল্পমূল্যে স্মার্ট ডিভাইস ও ডাটা নিশ্চিত করতে পারলে এবং প্ল্যান নিয়ে অগ্রসর হলে একদিন আমরা সফল হবই।

** এই ভাবনাগুলো আমার ব্যক্তিগত। ভিন্নমত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আলোচনা চলতে পারে।

লেখক : ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, বাহুবল।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com