শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ অপরাহ্ন

বরিশালকে হারিয়ে চট্টগ্রামের তিনে তিন

তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : মুমিনুল হক চোটে ছিটকে না গেলে হয়তো একাদশেই থাকা হতো না সৈকত আলির। সুযোগ পেয়ে তিনি খেললেন দারুণ এক ক্যামিও। ধুঁকতে থাকা চট্টগ্রাম পেল লড়াইয়ের ভিত। সেই রানকে জয়ের জন্য যথেষ্ট করে তুলল মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলামদের দুর্দান্ত বোলিং। চট্টগ্রাম পেল টানা তৃতীয় জয়।

ফরচুন বরিশালকে ১০ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে হ্যাটট্রিক জয়ের স্বাদ পেল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার খানিকটা মন্থর উইকেটে সৈকতের ১১ বলে ২৭ রানের ইনিংসে চট্টগ্রাম ২০ ওভারে তোলে ১৫১ রান। বরিশাল যেতে পারে ১৪১ পর্যন্ত।

চট্টগ্রামের দুই বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ ও শরিফুলের শিকার ৩টি করে উইকেট।

আলাদা করে বলতে হবে তাদের তিন অফ স্পিনারের কথাও। বরিশালের ব্যাটিং অর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের আধিক্য দেখে নাহিদুল ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে সঞ্জিত সাহাকেও একাদশে আনে চট্টগ্রাম। এই কৌশল কাজে লেগে যায় দারুণভাবে। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১০ ওভারে তিন অফ স্পিনার মিলে রান দেন মাত্র ৬৩।

টস জিতে বোলিংয়ে নামা বরিশালকে দ্রুত উইকেট এনে দেন আবু জায়েদ। তার স্লোয়ার শর্ট বলে বাজে শটে বিদায় নেন সৌম্য সরকার (৫)।

আসরে প্রথমবার ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ মিঠুন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দারুণ কিছুর। কিন্তু তার সম্ভাবনাময় ইনিংসও শেষ হয় আলগা শটে। সুমন খানকে দারুণ এক ফ্লিকে ছক্কা মারার এক বল পরই চট্টগ্রাম অধিনায়ক শর্ট বলে ক্যাচ দেন মিড উইকেট সীমানায় (১৩ বলে ১৭)।

উইকেট বিলিয়ে আসায় পরের পালা লিটন দাসের। যথারীতি দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি শট খেলেন তিনি। বড় কিছুর জন্য প্রস্তুত বলেও মনে হচ্ছিল। চেনা রোগ ফিরে আসে তখনই। মেহেদী হাসান মিরাজের নিরীহ এক বল শাফল করে সুইপ মতো খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট ফাইন লেগে (২৫ বলে ৩৫)।

মিডল অর্ডারে শামসুর রহমান বেশ কিছুক্ষণ উইকেটে থাকলেও গতি পাননি (২৮ বলে ২৬)। একটি ছক্কা মারতে পারলেও ছন্দ খুঁজে পাননি মোসাদ্দেক হোসেন (২৪ বলে ২৮)। জিয়াউর রহমান তেঁড়েফুঁড়ে চেষ্টা করলেও ব্যাটে-বলে করতেই ব্যর্থ বারবার (৯ বলে ২)।

কামরুল ইসলাম রাব্বি, মেহেদী হাসান মিরাজদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ১৩০ ছুঁতেও বেগ পেতে হতে চট্টগ্রামকে। কিন্তু চিত্র পাল্টে দেন সৈকত। ১৯তম ওভারে তিনি তিনটি বিশাল ছক্কায় ওড়ান আবু জায়েদকে।

শেষ ওভারে নাহিদুল ইসলামের টানা দুই চারে চট্টগ্রাম স্পর্শ করে দেড়শ। শেষ তিন ওভার থেকেই রান আসে ৪২।

বরিশালের রান তাড়ার শুরুটা ছিল সম্ভাবনাময়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বাঁহাতি পেসার শরিফুলকে লং অনের ওপর দিয়ে বাইরে ফেলেন তামিম। নাহিদুলকে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন মিরাজ।

কিন্তু তাদের সম্ভাবনা মিলিয়ে যেতে থাকে চট্টগামের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। রানের জন্য ছটফট করে মুস্তাফিজকে উইকেট দিয়ে আসেন পারভেজ হোসেন ইমন।

শরিফুলের পর নাহিদুলকে বেরিয়ে এসে ছক্কা মেরেছিলেন তামিম। কিন্তু তিনি পাননি প্রত্যাশিত গতি। রান বাড়তে গিয়েই দিয়ে আসেন নিজের উইকেট (৩২ বলে ৩২)।

সৌম্য সরকারকে টানা দুই বলে ছক্কা ও চারে রোমাঞ্চ কিছুটা ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন তৌহিদ হৃদয়। পরের বলেই তার বিদায়ে রোমাঞ্চের সমাপ্তি (১০ বলে ১৭)।

ইরফান শুক্কুর, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনরা ব্যর্থ আবার। বরিশালের আশার খানিকটা জিইয়ে ছিল কেবল আফিফ হোসেন ছিলেন বলে। দুর্দান্ত ইয়র্কারে তাকে বোল্ড করে দেন শরিফুল (২২ বলে ২৪)।

শেষ দিকে সুমন খানের ৮ বলে ১৫ রানের ইনিংসে ব্যবধান কিছুটা কমায় বরিশাল। তিন ম্যাচে এটি তাদের দ্বিতীয় হার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম: ২০ ওভারে ১৫১/৭ (লিটন ৩৫, সৌম্য ৫, মিঠুন ১৭, শামসুর ২৬, মোসাদ্দেক ২৮ , জিয়াউর ২, সৈকত ২৭, নাহিদুল ৮*; সুমন ৪-০-৩১-১, তাসকিন ৪-০-৩১-১, আবু জায়েদ ৪-০-৩০-১, কামরুল রাব্বি ৪-০-২৩-১, মিরাজ ৪-০-২৫-১)।

ফরিচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৪১/৮ (মিরাজ ১৩, তামিম ৩২, পারভেজ ১১, আফিফ ২৪, হৃদয় ১৭, ইরফান ২, মাহিদুল ১০, তাসকিন ২, সুমন ১৫*, কামরুল ২*; নাহিদুল ৪-০-২৬-০, শরিফুল ৪-০-২৭-৩, মোসাদ্দেক ৩-০-১৭-১, সঞ্জিত ৩-০-২০-০, মুস্তাফিজ ৪-০-২৩-৩, সৌম্য ২-০-২০-১)।

ফল: গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১০ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শরিফুল ইসলাম।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com