বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

যুদ্ধাপরাধী আজহার-কায়সারের আপিল কার্যতালিকায়

এ টি এম আজহারুল ইসলাম (বাঁয়ে) এবং সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার

তরফ নিউজ ডেস্ক : যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে একাত্তরের আলবদর নেতা জামায়াতের এটিএম আজহারুল ইসলাম এবং জাতীয় পার্টির সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিল দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সর্বোচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় এসেছে।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আপিল বিভাগের বুধবারের কার্যতালিকায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের বেঞ্চে এ টি এম আজহারের আপিলটি এক নম্বরে এবং সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিলটি দুই নম্বর ক্রমিকে রাখা রয়েছে।

যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনালে আজহারের মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে ২০১৪ সালে। আর কায়সারের সর্বোচ্চ সাজার রায় হয় তার পরের বছর।

আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায়ের এক মাসের মধ্যে খালাস চেয়ে আপিল করেন দুই যুদ্ধাপরাধী।

এরপর ২০১৭ সালের ১৩ অগাস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ এ দুটি আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেয়।

ওই বছর ১০ অক্টেবর দুই আপিলের ওপর শুনানি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনে তা পিছিয়ে যায়।

প্রায় দেড় বছর পর আবার মামলা দুটি সর্বোচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় এল।

এ টি এম আজহারুল ইসলাম

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনাল-১ একাত্তরে রংপুর জেলা আলবদর বাহিনীর কমান্ডার এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

প্রসিকিউশনের আনা নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে।

এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে অন্তত ১৪০০ লোককে হত্যা এবং ১৪ জনকে খুনের অপরাধে।

এছাড়া ওই অঞ্চলের বহু নারীকে রংপুর টাউন হলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রে ধর্ষণের জন্য তুলে দেওয়ার অভিযোগে একাত্তরের এই বদর কমান্ডারকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অপহরণ ও আটকে রেখে নির্যাতনের আরেকটি ঘটনায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপিল করেন জামায়াতে ইসলামীর এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল।

সৈয়দ কায়সার

মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে সৈয়দ কায়সারকে ২০১৫ সলের ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

১৯৭১ সালে দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে ওই

দুই জেলায় যুদ্ধাপরাধে নেতৃত্ব দেন তখনকার এই মুসলিম লীগ নেতা। জিয়াউর রহমানের আমলে তিনি হয়ে যান বিএনপির লোক, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময় জাতীয় পার্টির।

ট্রাইব্যুনালের বিচারক বলেন, সৈয়দ কায়সারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

তাকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে, যার মধ্যে দুই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে। এই দুই বীরাঙ্গনার মধ্যে একজন এবং তার গর্ভে জন্ম নেওয়া এক যুদ্ধশিশু এ মামলায় সাক্ষ্যও দিয়েছেন।

২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন সৈয়দ কায়সার।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com