শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন
তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তানকে কম রানে থামিয়ে আসল কাজটা সেরে রেখেছিলেন পেসাররা। ক্রিস গেইলের দাপুটে ফিফটিতে বাকি কাজটুকু অনায়াসে সারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বড় জয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল জেসন হোল্ডারের দল। পাকিস্তানের অভিযান শুরু হল যেন দুঃস্বপ্ন দিয়ে।
নটিংহ্যামে শুক্রবার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০৬ রানের লক্ষ্য ২১৮ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে ক্যারিবিয়ানরা।
এমন মাঠে দাপট দেখালেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা যেখানে বেশিরভাগ সময় রাজত্ব করেন ব্যাটসম্যানরা। তবে কন্ডিশন থেকে সহায়তা পেলে যে ট্রেন্ট ব্রিজের ব্যাটিং স্বর্গেও ব্যাটসম্যানদের ভোগানো সম্ভব তা দেখালেন পেসাররা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান দাঁড়াতেই পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস আক্রমণের সামনে। শুরু থেকেই প্রকট হয়ে উঠে শর্ট বলে ব্যাটসম্যানদের দুর্বলতা। সেটা দারুণভাবে লাগিয়েছেন জেসন হোল্ডার, ওশান টমাস, আন্দ্রে রাসেলরা।
তৃতীয় ওভারে ভাঙে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। শেলডন কটরেলের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে কিপারের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফিরেন ইমাম-উল-হক। আন্দ্রে রাসেলের বাউন্সার ফখর জামানের হেলমেটের গ্রিলে লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে।
১২ রানে একবার জীবন পাওয়া বাবর আজম টানতে পারেননি পাকিস্তানকে। বেশিক্ষণ টিকেননি অধিনায়ক সরফরাজ। অনেকটা সময় ক্রিজে থাকা মোহাম্মদ হাফিজ ফিরেন ওশান টমাসের গতিময় বাউন্সারে।
একশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়া দলকে তিন অঙ্কে নিয়ে যান ওয়াহাব রিয়াজ। তাকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে ১০৫ রানে থামিয়ে দেন টমাস। বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে এটাই দেশটির সর্বনিম্ন। গত বিশ্বকাপে ক্রাইস্টচার্চে করা ১৬০ ছিল তাদের আগের সর্বনিম্ন।
বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বনিম্ন মাত্র ২১ ওভার ৪ বল টিকে পাকিস্তানের ইনিংস। প্রথমবারের মতো তাদের ৩০ ওভারের নিচে গুটিয়ে দেওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান টমাসের। ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন গতিময় এই পেসার। অধিনায়ক হোল্ডার ৩ উইকেট নেন ৪২ রানে।
ছোট রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পথ দেখান গেইল। ৩৪ বলে তিন ছক্কা ও ছয় চারে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা বাঁহাতি ওপেনারকে ফেরান মোহাম্মদ আমির। বাঁহাতি এই পেসার এর আগে বিদায় করেন শেই হোপ ও ড্যারেন ব্রাভোকে।
ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা নিকোলাস পুরান ১৯ বলে অপরাজিত থাকেন ৩৪ বলে। বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোনো ম্যাচে দুইশ বল বাকি থাকতে হারে পাকিস্তান। বল বাকি থাকার দিক থেকে তাদের সবচেয়ে বড় হার ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরেছিল ১৭৯ বল বাকি থাকতে।
২৬ রানে ৩ উইকেট নেন আমির। খরুচে বোলিং করে উইকেটশূন্য থাকেন হাসান আলি ও ওয়াহাব রিয়াজ।
দারুণ বোলিংয়ে ৪ উইকেট নেওয়া টমাস জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২১.৪ ওভারে ১০৫ (ইমাম ২, ফখর ২২, বাবর ২২, হারিস ৮, সরফরাজ ৮, হাফিজ ১৬, ওয়াসিম ১, শাদাব ০, হাসান ১, ওয়াহাব ১৮, আমির ৩*; কটরেল ৪-০-১৮-১, হোল্ডার ৫-০-৪২-৩, রাসেল ৩-১-৪-২, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-১৪-০, টমাস ৫.৪-০-২৭-৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৩.৪ ওভারে ১০৮/৩ (গেইল ৫০, হোপ ১১, ব্রাভো ০, পুরান ৩৪*, হেটমায়ার ৭*; আমির ৬-০-২৬-৩, হাসান ৪-০-৩৯-০, ওয়াহাব ৩.৪-১-৪০-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ওশান টমাস