বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : হবিগঞ্জের বাহুবলে সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নির্বিঘ্নে চলছে বালু ও মাটি পাচার। উপজেলা ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বালু ও মাটি পাচারকারী চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বালু ও মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচলের কারণে জনচলাচল সহ সরকারি রাস্তাঘাট হুমকির মুখে পড়েছে। এতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে বাহুবল- রশিদপুর সড়কের পশ্চিম ভাদেশ্বর এলাকায় ইটভাটার মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চাপায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় উপজেলা জুড়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ওই সময় ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থীরা বাহুবল পরীক্ষা কেন্দ্রে আসছিল। এসময় বাহুবল রশিদপুর সড়কের পশ্চিম ভাদেশ্বর এলাকায় ইটভাটার অবৈধ মাটি বোঝাই ট্রাক্টর মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের জান্নাতুন নাহার হেনা নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই পরিক্ষার্থী গুরতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করান। পরে রক্তাক্ত অবস্থায়ই ওই শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় অংশ নেয় ।
এ ঘটনার জের ধরে ফয়জাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষার্থী ও স্কুল কমিটির সভাপতি হারুন আল রশীদ সহ অভিভাবকবৃন্দ বাহুবল মডেল থানায় এসে বিচারের দাবি জানান। এ প্রেক্ষিতে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের বিচারের আশ্বাস দিয়ে তাদের শান্তনা করেন। এ সময় সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ পরীক্ষা চলাকালে রশিদপুর- বাহুবল সড়কে বেপরোয়া ট্রাক্টর চলাচল বন্ধের দাবি জানান। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরীর নির্দেশে ৩ টি ট্রাক্টর পুলিশ আটক করে।
পরে এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী ও বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ বাহুবল বাজারে বিশেষ অভিযান চালিয়ে যানজট সৃষ্টির অভিযোগে কয়েকটি সিএনজি অটোরিকশা আটক করে থানায় নিয়ে যান।
উল্লেখ, গত ২ ফেব্রুয়ারি ইটভাটার মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চলাচলের ঘটনায় জের ধরে মিরপুর বাজারে দোকান খুলতে বাধা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইটভাটা মালিকের লোকজন ও স্থানীয় পূর্ব জয়পুর গ্রামের লোকজন সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। খবর পেয়ে এএসপি পারভেজ আলম চৌধুরী ও বাহুবল মডেল থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামানসহ প্রশাসনিক কর্মকতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
সারাদেশে কৃষি জমি থেকে এসকেবেটর দিয়ে ট্রাক্টর যোগে মাটি পাচার বন্ধ থাকলেও বাহুবলের চিত্র ভিন্ন। এখানে দিনে রাতে চলছে বালু ও মাটি পাচার। সূত্রে জানা গেছে, কৃষি জমির খাজনা হালনাগাদ করলেই মাটি পাচারের সুযোগ করে দিচ্ছ উপজেলা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিস। এ সুবাদে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে নজরানা। এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে সচেতন মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে।