রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্যচাষে গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেড়িয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করার মাধ্যমে দেশীয় প্রজাতির মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ সকালে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্ত করে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০’ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি মৎস্যখাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি স্মরণ করেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চাষের মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করতে ১৯৭৩ সালে গণভবনের লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। জাতির পিতা পাট, চামড়া, চা-এর সাথে মাছকেও বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন এবং মৎস্যসম্পদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় প্রধান খাত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।
তিনি বলেন, দেশে প্রায় পৌনে পাঁচশত প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ এবং ২৫০ প্রজাতির বেশি স্বাদুপানির মাছ রয়েছে। এছাড়াও, চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুকসহ অসংখ্য মৎস্যসম্পদের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও উল্লেখ করেন, মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হয় তেমনি সমৃদ্ধ হয় জাতীয় অর্থনীতি। আওয়ামী লীগ সরকার এ খাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যকর ও ফলপ্রসূূ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে, গত ১১ বছরে মাছের উৎপাদন ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী স্বাদুপানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ এবার বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পুর্ণ। বর্তমানে জনপ্রতি দৈনিক ৬০ গ্রাম চাহিদার বিপরীতে ৬২.৫৮ গ্রাম মাছ আমরা গ্রহণ করছি।
কোভিড-১৯ এর মধ্যেও মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার কর্মীবৃন্দ যেভাবে ঝুঁঁকি নিয়ে মাছের উৎপাদন, বিপনন এবং রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে, এজন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থে এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশের জনগোষ্ঠীর শুধু পুষ্টি চাহিদা পূরণ নয়, ব্যাপক কর্মসংস্থান, বিদেশে মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।
গণভবন লেকে পোনামাছ অবমুক্তকরণের সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
এসময়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকারের গৃহীত নানামূখী পদক্ষেপ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, মৎস্য খাতে গত ১১ বছরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বাড়তি প্রায় ৬৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বৃদ্ধি পেয়েছে মৎস্য চাষি ও মৎস্যজীবীদের আয়। মা-ইলিশ রক্ষা ও জাটকা নিধন রোধে আমরা কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করে। জাটকা আহরণে বিরত দরিদ্র জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেয়া অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে, ইলিশের উৎপাদন ২০০৯ এর পরিমান থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।