সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা: নবীগঞ্জের বহুল আলোচিত কলেজ ছাত্রী তন্নী রায়কে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা মামলার রায় হবে আগামী ৭ জানুয়ারী সোমবার।
গত ১ ও ২ জানুয়ারী আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক পর্ব শেষে মামলার রায়ের দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ সিলেট এর বিচারক মোঃ রেজাউল করিমের আদালতে যুক্তিতর্ক চলে। বিভাগীয় স্পেশাল পিপি কিশোর কুমার কর আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে আইনগত যুক্তি উপস্থাপন করেন।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীও আসামিকে নির্দোষ উল্লেখ করে তাদের বেকসুর খালাস দাবি করে আইনগত যুক্তি তুলে ধরেন। উভয় পরে যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক ৭ জানুয়ারী রায়ের দিন ধার্য করেন।
আলোচিত এই হত্যাকান্ডের এক বছর সাত মাস পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কর্তৃক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তর করা হয়। এর পর ২০ জনের স্বাক্ষ গ্রহণ করেন আদালত। হত্যাকান্ডের মূল হোতা ঘাতক রানু রায় কারাগারে রয়েছে।
এদিকে, তন্নী হত্যা মামলার আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড চায় মামলার বাদী নিহতের পিতা ও স্বজনরা।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বেলা দেড়টার দিকে তন্নী রায় নবীগঞ্জ শহরতলীর শেরপুর রোডস্থ ইউকে আইসিটি ইন্সটিটিউট কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেড় হয়ে আর ফেরেনি। তার নিখোঁজের ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন তন্নী রায় এর বাবা বিমল রায়। সাধারণ ডায়েরী করার ৩ দিনের মাথায় কলেজ ছাত্রী তন্নী রায়ের বস্তাবন্দি লাশ নবীগঞ্জ শহরতলীর একটি নদী থেকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।
এদিকে তন্নী হত্যা মামলার প্রধান আসামী রানু রায়কে গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে একের পর এক বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন মানববন্ধন করে আসছিল। হত্যাকান্ডের ২০ দিনের মাথায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের তৎক্ষালিন ওসি আজমিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল ডিবি পুলিশ ব্রাম্মণবাড়িয়ার বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। পরদিন হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক নিশাত সুলতানার আদালতে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে এবং তন্নী হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।
ওই সময় হত্যার কারণ হিসেবে রানু রায় স্বীকারোক্তিতে বলে- তন্নীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। এর কারণে ১৭ সেপ্টেম্বর শনিবার প্রেমিক রানু রায়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তন্নী কোচিং সেন্টারে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে তার বাড়িতে যায়। যাওয়ার পর তন্নীর সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বার্তার এক পর্যায়ে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এ সময় রানু রায় তন্নীকে হাত দিয়ে জোরে আঘাত করে। এরপর তন্নীর গলায় রানু চেপে ধরলে এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে তন্নী মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে।