রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী বলেই অপপ্রচার চালানোর পরও আল জাজিরার সম্প্রচার দেশে বন্ধ করা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, হাইকোর্টের নির্দেশ পেলে আলজাজিরার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাইকোর্ট এটি বন্ধ করতে কোনো আদেশ দিলে সেক্ষেত্রে আদেশ আমাদেরকে মানতে হবে।
চট্টগ্রাম নগরীর বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চাইলে আলজাজিরার সম্প্রচার আমাদের দেশে বন্ধ করতে পারতাম, অনেক দেশে বন্ধ করা হয়েছে এবং বন্ধ রয়েছে। এমনকি ভারতেও কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল। এখনো ৬-৭টি দেশে আলজাজিরার সম্প্রচার বন্ধ আছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার যেহেতু গণমাধ্যমের অবাধ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, তাই আমরা সেই উদ্যোগ নিইনি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার যেমন দরকার, দায়িত্বশীলতারও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা মানে এই নয়, ভুল, মিথ্যা, পক্ষপাত দুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অপরের স্বাধীনতা হরণকারী সংবাদ পরিবেশন করা। এটা কোনভাবেই সমীচিন নয়। আলজাজিরার রিপোর্ট একটি মিথ্যা বানোয়াট, কিছু কাট-পেস্ট করে রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়েছে। এটি একটি ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপি নেতারা অনেক ধরণের বিরোধিতা করে আসছিল, এখন তারাও ভ্যাকসিন নিচ্ছেন সাংবাদিকরা এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালিয়েছেন, তারা প্রথমে বলেছেন- সরকার ভ্যাকসিন সময়মতো আনতে পারবে না, যখন সময়মতো চলে এলো তখন বললেন- এটি নিলে কোন কাজ হবে না। এই ভ্যাকসিন দিয়ে বিএনপি নেতাদের মেরে ফেলতে চাচ্ছেন। এ ধরণের কথাও বলেছেন তারা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নানা ধরনের প্রশ্ন তুলে, দায়িত্বহীন অনেক কথা বলে শেষ পর্যন্ত বিএনপির অনেক নেতা করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছেন এবং নেয়ার পক্ষে কথাও বলেছেন। সেজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। কথায় আছে না- ‘গাধা জল ঘোলা করে খায়’, করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকাও সেরকমই ঘটেছে। আমরা চাই তারা ভ্যাকসিন নিয়ে সুস্থ ও সবল থাকুক, তারা বিরোধী দল, বিরোধিতার ভূমিকায় তারা আছেন, আমাদের বিরোধিতা করুক- বলেন তথ্যমন্ত্রী।
জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আসলে কি ছিল- সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে তিনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো হয়নি এখনো। এটা নিয়ে জামুকাতে আলোচনা হয়েছে মাত্র।
বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি তো বিরোধী দল, তারা বিক্ষোভ করতেই পারে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ অন্যান্য যেসব ইস্যুতে তারা বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন তা হাস্যকর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কিংবা পাশের দেশে যে ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় সেই নিরিখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন একটা ভালো নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু কার্যত মাঠে ছিল না। ভোটের দিন তাদের কাউকে দেখা যায়নি।
তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে বিএনপির মহাসচিব কি চট্টগ্রাম এসেছিলেন? তিনি কি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন? একটা মিটিং করেছেন? অথচ তাদের তো প্রচারণা চালাতে কোন অসুবিধা ছিল না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের নানা বাধ্যবাদকতার কারণে আমাদের দলের এমপি এবং মন্ত্রীদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেবসহ তাদের দলের নেতারা যারা প্রতিদিন নয়াপল্টনে কথা বলেন, তাদের তো কোন সমস্যা ছিল না। তারা কিন্তু আসেনি।
তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে আমাদের প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন থেকেই বিএনপির পরাজয় শুরু। মাঝখানে একবার আওয়ামী লীগ থেকে মঞ্জুরুল আলম মঞ্জুকে হায়ার করে নিয়ে গিয়ে তারা জয় লাভ করেছিল। তারা কখনোই এই শহরে জয়লাভ করেনি, বরাবরই আওয়ামী লীগই জয়লাভ করেছে। কারণ এটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। সুতরাং এই নিয়ে বিক্ষোভ করে কোন লাভ নেই।