শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বিবস্ত্র অবস্থায় পালাতে হলো তাকে

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদ্যালয়ে কোচিং করতে যাচ্ছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী (১৭)। পথে এক প্রতিবেশী ব্যক্তি জরুরি কাজের কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে বিবস্ত্র অবস্থায় ওই ছাত্রী দৌড়ে গিয়ে আরেক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।

ঘটনাটি মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী এলাকায় ঘটে।

ওই ব্যক্তি হলেন হেলাল উদ্দিন (৪২)। গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম কচুরগুল গ্রামে তাঁর বাড়ি। এ ব্যাপারে বিকেলে জুড়ী থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাড়ি গোয়ালবাড়ীর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। সে এ বছর স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোচিং ক্লাস চলছে। কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সে বাড়ি থেকে হেঁটে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। পথে হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে তার দেখা হয়। এ সময় হেলাল উদ্দিন তাঁর স্ত্রীর একটি জামা সেলাইয়ের জন্য বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত দরজির দোকানে দিতে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যান।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানান, বসতঘরে ঢোকার পর হেলাল দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছাত্রী বিবস্ত্র অবস্থায় দরজার সিটকিনি খুলে দ্রুত আরেক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। একপর্যায়ে সে সেখানে অচেতন হয়ে পড়ে। এ সময় খবর পেয়ে স্বজনেরা ছুটে এসে মেয়েটিকে অসুস্থ অবস্থায় পাশের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ঘটনার সময় হেলাল উদ্দিন বাড়িতে একা ছিলেন। তাঁর স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে সম্প্রতি বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পর হেলাল উদ্দিন বাড়ির পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে পড়েন। এদিকে ছাত্রীর ওপর নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা জঙ্গল ঘেরাও করে হেলাল উদ্দিনকে ধরে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সেখানে গেলে তাঁকে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা হেলালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করলে পুলিশ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। বিকেল পাঁচটার দিকে ওই শিক্ষার্থীর বাবা হেলাল উদ্দিনকে আসামি করে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন।

এলাকাবাসী জানান, হেলাল উদ্দিন দীর্ঘদিন অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে ছিলেন। বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি না পেয়ে চার-পাঁচ বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন।

গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, তিনি হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রীকে দেখে এসেছেন। তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তির কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রী প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।

জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁকে মৌলভীবাজারের আদালতে পাঠানো হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com