সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

মনসুরের ‘হ্যাঁ’ মোকাব্বিরের ‘না’!

নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহন নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। দু’জনই দলীয় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই ভোটারদের সম্মানের দোহাই দিয়ে শপথ গ্রহনের ব্যাপারে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ইতিবাচক বক্তব্য দিয়ে এসেছিলেন। কিন্ত বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক, গণফোরামের প্রেসিডেন্ট ডা. কামাল হোসেন এর কাছ থেকে শপথ নেওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর পরই নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে ‘না’ অবস্থানে মোকাব্বির খান আর সুলতান মনসুর এখনও ‘হ্যাঁ’ অবস্থানেই আছেন।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনকি সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি, মৌলভীবাজার-২ আসনের বর্তমান সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ শপথ নেওয়ার ব্যাপারে বলেছেন- যেহেতু জনগণের জন্য রাজনীতি করি সেহেতু জনগণের মতামতকে মূল্য দিতে হবে।সারাদেশের অনেক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এই সময়ে আমি একজন মানুষও পাইনি যে, শপথের বিপক্ষে।

শপথ না নিলে নির্বাচনী এলাকা মৌলভীবাজার-২ আসনের ভোটারদের অসম্মান করা হবে বলেও মনে করেন সুলতান মনসুর।

সুলতান মনসুর বলেন- এর বাইরে অন্যরা কে কী বলেছে, তা আমি জানি না। সময় তো আছে, তাড়াহুড়ার কিছু নেই। ৯০ দিনের মধ্যে শপথ নিলেই হবে। জনগণ শত প্রতিকূলতা মাঝে অনেক ত্যাগ স্বীকার করে আমাদের নির্বাচিত করেছে। আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছি। তবে সরাসরি বিএনপি থেকে নির্বাচন করিনি। ধানের শীষ ঐক্যফ্রন্টের প্রতীক। যেহেতু নির্বাচন করব, তাই এই প্রতীক নিয়েছিলাম।

তিনি বলেন- আওয়ামী লীগ থেকে আমাকে কেউ বের করে দেয়নি। আর আমি কোনো দলে যোগদানও করিনি। আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। গণফোরাম থেকে নির্বাচনে গেছি। কারণ গণফোরামে বঙ্গবন্ধুর চিন্তার মিল আছে।

অন্যদিকে সিলেট-২ আসন থেকে বিজয়ী গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংসদ হিসেবে শপথ নেবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে দলের সিদ্ধান্ত সংসদে না যাওয়ার পক্ষে। সুতরাং দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আর শপথ নিচ্ছি না। যতক্ষণ পর্যন্ত দল ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে না ততক্ষণ তিনিও শপথ নেবেন না।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিতদের কেউ সংসদে যোগ দেবেন না বলে জোটের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এ ব্যাপারে মোকাব্বির খান বলেন, শপথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছিলেন সেটি দলের শীর্ষ পর্যায়ের মনোভাব বুঝেই। বলেন, উনি (ড. কামাল) প্রথম দিকে নিজেও বলেছিলেন যে সংসদে যাওয়ার ব্যাপারে উনার মতামত ইতিবাচক।

তাহলে আজকের এই ঘোষণার পর কি আর সংসদে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা রইল না? এই প্রশ্নের জবাবে মোকাব্বির খান বলেন, এখন দলের সিদ্ধান্ত না যাওয়ার পক্ষেই কিন্তু এটাও তো স্থায়ী কিছু না। সব ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ করবেন বলে জানান তিনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের যে দুজন এবার জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন তাদের শপথ নেওয়ার ব্যাপারে গত কিছু দিন ধরেই চলছে জল্পনা কল্পনা। গত ২৮ জানুয়ারি মৌলভীবাজার-২ ও সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান জানান যে তারা শপথ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক।

মোকাব্বির খান সেদিন বলেন, “যেহেতু গণফোরামের নির্বাচিত প্রার্থীদের শপথ নেওয়ার ব্যাপারে দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, সেক্ষেত্রে আমার অবস্থানও ইতিবাচক। তবে, শপথ নেব কি নেব না, ড. কামাল হোসেন দেশে ফিরলে তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।”

গণফোরামের এই দুই নেতার দিক থেকে এমন বক্তব্য আসার পর থেকে ঐক্যফ্রন্টের ভেতরের ঐক্য নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কারণ শুরু থেকেই বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, জোটের কেউ সাংসদ হিসেবে শপথ নেবে না।

বিষয়টি পরিষ্কার করে আজ ড. কামাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে আমাদের বিজয়ী প্রার্থীদের কেউ সংসদে যাবেন না।”

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com