তরফ স্পোর্টস ডেস্ক :
সিলেট টেস্ট শেষের সেই মিইয়ে যাওয়া চেহারাটা নেই। মিরপুর টেস্ট শুরুর আগের দিন অনুশীলনে মাহমুদউল্লাহকে দেখা গেল দারুণ চনমনে। আগের চেয়ে তুলনামূলক প্রাণবন্ত উপস্থিতি সংবাদ সম্মেলনেও। কণ্ঠে ও আচরণে ইতিবাচকতার বার্তা নিয়ে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়ক জানালেন, নিজেদের শতভাগের চেয়ে বেশি উজার করে দিয়ে মিরপুর টেস্টে ঘুরে দাঁড়বে দল।
রোববার (১১ নভেম্বর) থেকে শুরু বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্ট। সিলেট টেস্টে অভাবনীয় জয়ে সিরিজে এগিয়ে জিম্বাবুয়ে। মিরপুরে ফল বদলাবে কিনা, সেটি বলবে সময়। তার আগে বদল এসেছে ম্যাচ শুরুর সময়ে। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমণী বার্তা, বিকেলের নরম আলো থেকে ঝুপ করে নেমে যায় সন্ধ্যার আঁধার। ১০টার পরিবর্তে ম্যাচ শুরু হবে তাই সকাল সাড়ে ৯টায়।
সিরিজ শুরুর আগে যা ছিল আবহ, তাতে এই টেস্ট হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের ম্যাচ। কিন্তু সিলেটের অভিষেক টেস্ট বদলে দিয়েছে সব হিসাব। বাংলাদেশের সামনেই এখন হোয়াইটওয়াশড হওয়ার শঙ্কা। সিরিজ বাঁচাতে জয়ের বিকল্প নেই। যেনতেন প্রকারের জয়ও হয়তো হবে না যথেষ্ট। সিলেটের ক্ষতি কোনোভাবেই পুষিয়ে দেওয়ার জো নেই, তবে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিলে মিলতে পারে খানিকটা স্বস্তির পরশ।
মিরপুরে সেই স্বস্তির খোঁজেই নামবে বাংলাদেশ। সিলেট টেস্ট শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, এভাবে খেলে গেলে টেস্ট খেলার কোনো মানে হয় না। ড্রেসিং রুমেও অধিনায়ক দিয়েছেন একই বার্তা। দলের সবাই বসেছিলেন একসঙ্গে। চলেছে আত্মজিজ্ঞাসার পালা। মাহমুদউল্লাহর দাবি, অমন হার যন্ত্রণার ঝড় তুলেছে দলের সবার হৃদয়ে।
“ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকে যেভাবে দেখি, জিম্বাবুয়েকেও আমরা একই চোখে দেখি। মাঠে গিয়ে ভালো খেলাটাই থাকে মূল লক্ষ্য। সেটা করতে না পারলে খারাপ লাগে, কারণ দেশের হয়ে ভালো করতে পারছি না। এটা সবাইকেই অনেক পীড়া দেয়। আমরা এখন সবার সাথেই কথা বলেছি, টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সাথেই আলাপ হয়েছে। আমাদের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মত অবস্থা। আমাদের শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়েতে হবে। অন্য কোনো সুযোগ নেই।”
গত টেস্টের ময়নাতদন্তে ভুলগুলোর পাশাপাশি খোঁজা হয়েছে ইতিবাচক দিকগুলোও। সেই ইতিবাচকতা ধরে রেখে ঘাটতিগুলো মিরপুরে পূরণ করতে চায় দল।
“সিলেটের ম্যাচের পর আমরা সবাই একত্রে বসেছিলাম। আমরা সেই ম্যাচে কি ইতিবাচক ব্যাপার ছিল, কি খারাপ করেছি যেগুলো আমরা পরের ম্যাচে করতে না, এই জিনিসগুলো পয়েন্ট আউট করেছি। আসল চিন্তার জায়গা ব্যাটিং। এই জায়গায় আমরা অন্য ফরম্যাটে যত ভালো করতে পারছি, টেস্ট ক্রিকেটে ততো ভাল করতে পারছি না। আবার আমরা যদি খুব বেশি চিন্তা করি, তাহলে চাপটা আমাদের উপরেই পড়বে। স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চাইব। সেটা করতে পারলে আমাদের ভাল করার সুযোগ থাকবে।”
গত কিছুদিনে টেস্টের যা পারফরম্যান্স, তাতে ব্যাটিং নিয়ে সংশয়ের অবকাশ আছে যথেষ্টই। তবে নিজেদের সামর্থ্যে বিশ্বাস থেকে ভরসা পাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ।
“সবার ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জায়গা থাকে। ক্রিকেটাররা নিজে থেকেও চিন্তা করে, দলও চিন্তা করে। আমার মনে হয় আমাদের দেশের ক্রিকেটাররা অনেক হৃদয় দিয়ে খেলে। যে দেশের জন্য খেলে, সবসময় ১০০ ভাগ দিয়েই খেলে। এই টেস্টে আমরা ১২০ ভাগ দিয়ে খেলব।”
সূত্র : বিডিনিউজ২৪