রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের পদ্মা সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে ৪০তম স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ছয় কিলোমিটার। আর বাকি রইল ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি স্প্যান বসানো। যা সম্পন্ন হলে ছয় হাজার ১৫০ মিটার (৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার) সেতুর অবকাঠামো দৃশ্যমান হবে।
৩৯তম স্প্যান বসানোর আট দিনের মাথায় বসানো হলো ৪০তম স্প্যানটি। অক্টোবরে চারটি ও নভেম্বরে চারটি নিয়ে মোট আটটি স্প্যান গেল দুই মাসে বসানো হয়েছে সেতুতে। ১৫ ডিসেম্বরে মধ্যে বাকি থাকা ৪১তম স্প্যানটিও বসানো হলে শেষ হবে স্প্যান বসানোর কাজ।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটের দিকে সেতুর ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের ওপর ৪০তম স্প্যান ‘টু-ই’ সফলভাবে স্থাপন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের।
এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ‘তিয়ান-ই’ নামের ভাসমান ক্রেনটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটিকে বহন করে রওনা দেয়। এরপর ৪০ মিনিট সময় নিয়ে ১১ ও ১২ নম্বর পিলারের কাছে এসে পৌঁছায়। অনুকূল আবহাওয়া আর কাজ এগিয়ে রাখার কথা ভেবে একদিন আগে স্প্যানটিকে নির্ধারিত পিলারের কাছে নিয়ে রাখা হয়।
পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্র জানায়, গতকাল ছয়টি ক্যাবলের (তার) মাধ্যমে নোঙর করার কাজটিও সম্পন্ন করে রাখা হয়েছিল। আর কোনো নৌযান যাতে বাধা তৈরি না করে, সেজন্য সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে নিরাপত্তা প্রদান করে। আজ সকাল থেকে দুই পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটি পজিশনিং করে। এরপর স্প্যানটিকে ধীরে ধীরে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। তারপর রাখা হয় দুইটি পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় সেতুর ছয় কিলোমিটার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে ৪০টি স্প্যান। বাকি থাকা স্প্যানটিও প্রস্তুত আছে মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন হবে দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব। এর মধ্যে গত ৩০ নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, এক হাজার ২৩৯টি রোডস্ল্যাব বসানো হয়েছে। এ ছাড়া, দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে এক হাজার ৮৬০টি।
ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর উপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।