বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ অপরাহ্ন
দিদার এলাহী সাজু, নিজস্ব প্রতিবেদক: সনাতনী পদ্ধতিতে পরিবেশ সম্মত ভাবে সিলেট জেলার সকল পাথর কোয়ারী খুলে দেয়ার দাবিতে আজ মঙ্গলবার ভোর ৬ টা থেকে ৭২ ঘন্টা পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকে এ ধর্মঘট চলবে ২৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টা পর্যন্ত। ধর্মঘটের সাথে একাত্বতা পোষণ করেছে হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপ। এর ফলে বন্ধ থাকবে হবিগঞ্জ জেলার সকল গণপরিবহনও।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম ফারুক বলেন, ‘ভোর ৬টা থেকে আমাদের শ্রমিকরা সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার মাধবপুরে অবস্থান করবে। প্রয়োজন হলে শায়েস্তাগঞ্জ-নতুনব্রীজসহ অন্যান্য স্থানেও অবস্থান করে পিকেটিং করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বার-বার বলেছি সনাতন পদ্ধতিতে পরিবেশ সম্মত ভাবে সিলেট বিভাগের সকল পাথর কোয়ারী খুলে দেয়া হোক। কারণ এর সাথে জড়িত প্রায় ১২ লক্ষ শ্রমিকের রুটি-রুজি, জড়িত জাতীয় স্বার্থও। কিন্তু আমাদের ন্যায্য দাবির প্রতি কোনরকম কর্ণপাতই করা হচ্ছে না। তাই রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘তথাকথিত কিছু পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে প্রায় ২ বছর যাবত পাথর কোয়ারীগুলো বন্ধ রয়েছে। এতে শুধু শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না, ব্যাহত হচ্ছে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড। আমরা মনেকরি, শুধুমাত্র মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়িকে আর্থিক সুবিধা দিতেই গুণগত মানসম্পন্ন দেশীয় পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখে নি¤œমানের ভারতীয় পাথর আমদানী করা হচ্ছে। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা আশা করি, জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পরিবেশ সম্মত ভাবে পাথর কোয়ারীগুলো খুলে দেবে।’
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ মটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শংখ শুভ্র রায় বলেন, ‘মানবিক কারণে আমরা ধর্মঘটের সাথে একাত্বতা পোষণ করতে বাধ্য হয়েছি। তবে আমরা শুধু আমাদের পরিবহণগুলোই বন্ধ রাখব, কোনরকম পিকেটিংয়ে অংশ নেবে না আমাদের শ্রমিকরা।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ‘বেলা’ সহ পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে প্রায় দুই বছর যাবত বন্ধ রয়েছে সিলেট বিভাগের সকল পাথর কোয়ারী। পরিবেশবাদীদের দাবি, মেকানিক্যাল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের কারণে পরিবশে দূষণ হচ্ছে। কিন্তু এর বিরোধীতা করছেন পাথর উত্তোলন ও পরিবহনের সাথে জড়িত শ্রমিকরা। তাদের দাবি, ইচ্ছা করলেই সনাতন পদ্ধতিতে পরিবশে সম্মত ভাবে পাথর উত্তোলন করা যায়। কিন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক ও তাদের পরিবার। এছাড়াও পর্যাপ্ত পাথর না থাকায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সরকারি উন্নয়ন কর্মকান্ড। অধিক মূল্য দিয়ে ভারতীয় পাথর ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে জনৈক পাথর ব্যবসায়ি জানান, কোয়ারী বন্ধ হওয়ার পূর্বে ফুট প্রতি দেশীয় পাথরের দর ছিল ৭০/৭৫ টাকা। বর্তমানে কোয়ারী বন্ধ থাকায় একই পরিমান পাথর ভারত থেকে আমদানী করতে হয় ১৪০/১৪৫ টাকায়। অনেক ক্ষেত্রে আবার দেশীয় পাথরের চেয়ে ভারতীয় পাথরের মানও খারাপ হয়।