রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

গণমাধ্যমের দায় ও সংকট

সাহিদা সাম্য লীনা : বর্তমানে গণমাধ্যম পূর্বের তুলনায় বেশ আলোচিত। আগে গণমাধ্যম নিয়ে এতো আগ্রহ, কৌতুহল ছিল না। প্রযুক্তির প্রসারের সাথে সাথে গণমাধ্যম আরো প্রসার লাভ করলেও গণমাধ্যম সম্পর্কে নানা জনের নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। সাধারণত, গণমাধ্যম হচ্ছে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যম। যার মাধ্যমে সংবাদ পৌঁছে যায় সব মানুষের কাছে। তবে সাধারণ কিছু মানুষ এখনো গণমাধ্যমের মূল জায়গাটা চিহ্নিত করতে পারেনি। যদিও প্রযুক্তির প্রসারতায় সব ডিভাইস এখন গণমাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে গণমাধ্যমে অর্ন্তভুক্ত যদিও ঠিক না।

গণমাধ্যমের দুটি শাখা মূলত। একটা প্রিন্ট মিডিয়া ও আরেকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও একবিংশ দশকে অনলাইন মিডিয়া ব্যাপক আলোচনায় আসে। সরকারি বেসরকারি ভাবে এইসব গণমাধ্যম গুলো সম্প্রচার হয়ে আসছে।
কম্পিউটার, মোবাইল , ইন্টারনেটকেও এখন গণমাধ্যম হিসেবে দেখছে। ইন্টারনেটের অসীম ক্ষমতায় গণমাধ্যমের কাছাকাছি চলে গিয়েছে। যার বদৌলতে খবর চলে যাচ্ছে নিমিষে!

গনমাধ্যম নিয়ে সুবিশাল আলোচনায় আজ না গিয়ে এর স্বাধীনতা নিয়ে একটু কথা বলা যায় । গণমাধ্যম কি স্বাধীন ? গণমাধ্যমে কি স্বাধীন ভাবে সব বলা যায়? গণমাধ্যম কর্মীরা কতটুকু স্বাধীন কাজে ? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যম স্বাধীন নয়, আবার গণমাধ্যম স্বাধীন দেখিয়ে এর কর্মীদের সবচেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রন করা হয়। মামলা,হামলার মতো জঘন্য আইনি মারপ্যাচে আটকে যায় তাদের কলম। বর্হিেিবশ্বর চাইতে এ দেশের গণমাধ্যমের থিওরি অনেক নীচে অবস্থান করছে। শক্তিশালী মিডিয়া পরাধীনতার শেকলে মাথা খুঁড়ে মরে যেন!

সাধারণ মানুষ জানে না গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। তারা সংবাদকর্মীদের নিয়ে বিদ্রæপ করে। সঠিক গণমাধ্যম হিসেবে তাই সাধারন জনতা কোন মাধ্যমকে বিশ্বাস করছে না যতো দিন যাচ্ছে ।
সম্প্রতি বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে এক তরুণী হত্যার প্ররোচনার মামলা হয়। সেই এমডি দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমের মালিক। ফলস্বরপ ,তার বিরুদ্ধে এসব সংবাদ মাধ্যম নিউজ প্রকাশে কাপর্ণ্য দেখায়। এভাবেই গণমাধ্যম তার নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে। স্বাধীনতা খর্ব হয়। আশেপাশের কোন সংবাদই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রচারিত হয় না বা মূদ্রনে আসে না। কোথায় একটা প্রতিবন্ধকত কাজ করছে!

এতদসত্তেও , গণমাধ্যমের ইতিহাস বেশ পুরনো। বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে উল্লেখ করা রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির চারটির একটি হলো গনতন্ত্র। দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাই গণতন্ত্র। এতে নাগরিকের মতামত, চলাচল ও বাক বিকাশের সুযোগ ও স্বাধীনতা থাকে। গনমাধ্যম ও গণতন্ত্র একি মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। গণমাধ্যমের সঠিক অনুশীলন গনতন্ত্রের জন্য পরিপূরক হিসেবে কাজ করে তেমন প্রকৃত গনতন্ত্র পারে স্বাধীন রাখতে। কিন্তু এটি এদেশে কার্যকর নেই। অথচ ,গনতান্ত্রিক একটা দেশ। বিপুল জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ,টুইটার ,ইন্সট্রাগ্রামে, ব্লগে মত প্রকাশ করলে ডিজিটাল এক্টে হাত পা বেঁধে যায়। অপরদিকে মূলধারার গণমাধ্যমকে ভেবেচিন্তে সেল্প সেন্সরশিপে থাকতে হয়।

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হবার পরো গুরুত্বপূর্ণ এই মাধ্যমটি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হতে বঞ্চিত। জাতীয় গণমাধ্যম সাপ্তাহ ২০২১ পালন হবে ; এখন এই স্বীকৃতি, এই দাবি এখন প্রযোজ্য। গণমাধ্যম সাপ্তাহ পালন করার সাথে সাথে এই দিনকে অন্যান্য দিবসের মতো রাষ্ট্রের স্বীকৃতি গণমাধ্যম কর্মীদের একান্ত চাওয়া। আর্ন্তজাতিকভাবে ০৩ মে গণমাধ্যম দিবস। কিন্তু দেশে এই দিবস ঘটা করে তেমন পালন হয় না ; মূলত স্বীকৃতির না পাবার কারণেই। যে পেশায় থেকে একজন সাংবাদিক তার জীবন যৌবন সব হারায়। বিনা বেতনে চলে তার দিবস ,মাস। মামলা হামলার ভয়ে থাকতে হয় সবসময়। এমন একটা পেশার স্বীকৃতি চাওয়াটা বেশি কিছু না। যেখানে সাংবাদিকদের আয়েশে, নির্ভিগ্নে ভবিষ্যৎ চলার কোন ফান্ড নেই সেখানে এই রাষ্ট্রের স্বীকৃতি যৎ সামান্য বলা যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com