শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

দূরপাল্লার বাস-লঞ্চ-ট্রেন চলাচল শুরু, স্বস্তিতে যাত্রীরা

তরফ নিউজ ডেস্ক : দীর্ঘ ৪৯ দিন পর রাজধানী থেকে সারা দেশে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সকাল থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার এসব গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়। ট্রেনের ভাড়া না বাড়লেও লঞ্চ ও বাসযাত্রীদের গুনতে হচ্ছে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া। দূরপাল্লায় বাস চলাচল শুরু হওয়ায় রাজধানীর বাস টার্মিনালে ফের কর্মচাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। বাসে টিকিট বিক্রি হচ্ছে এক আসন ফাঁকা রেখে। দূরপাল্লার এসব গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

এদিকে ২৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন দিয়ে শুরু হয়েছে রেল চলাচল। ট্রেনের ভাড়া না বাড়লেও এক আসন ফাঁকা রেখেই বসছেন যাত্রী। ৫০ শতাংশ টিকিটের পুরোটাই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে, বন্ধ রয়েছে কাউন্টার।

এদিকে মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে লঞ্চ চলাচল। লঞ্চে যাত্রী বহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে তৎপর থাকার কথা জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
এদিকে আমাদের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, টানা ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর কুষ্টিয়ার থেকে সব রুটে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সোমবার ভোর থেকে কুষ্টিয়া-ঢাকা সহ খুলনা-বরিশাল, রাজশাহী ও বগুড়া সহ দেশের বিভিন্ন রুটে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি-নিষেধ মেনে এসব যাত্রীবাহী বাস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাস চলাচল শুরু হওয়ায় এ খাতের শ্রমিকরা অত্যন্ত খুশি। পাশাপাশি সাধারণ যাত্রীরা তাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আনন্দ ও স্বস্তি প্রকাশ করছে।
বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু
ওদিকে শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনরোধে দীর্ঘ ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে সোমবার (২৪ মে) ভোর থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। ভোর ৬ টা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা লঞ্চে পার হতে শুরু করেছেন। এর আগে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেলে গত মাসের (এপ্রিল) ৫ তারিখ থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। এই সময়ে নৌরুটে শুধুমাত্র ফেরি চলাচল স্বাভাবিক ছিল। বিকল্প নৌযান না থাকায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি মাথায় নিয়ে ঈদে বাড়ি ফিরতে হয়েছে একই সাথে ঈদের পর ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে। এদিকে লঞ্চ চলাচল শুরু করায় স্বস্তি দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে।
বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু করায় যাত্রীরা ফেরির পাশাপাশি লঞ্চে পদ্মা নদী পার হচ্ছে। ফলে ফেরিতে কমে এসেছে যাত্রীচাপ আর গাদাগাদি অবস্থা। যাত্রীদের বেশির ভাগই লঞ্চে পার হচ্ছে। তবে লঞ্চে স্বল্প সংখ্যক যাত্রী পারাপারের নির্দেশনা থাকলেও তার কার্যকারিতা তেমন দেখা যায় নি। লঞ্চ কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, তারা ঘাটে দাঁড়িয়ে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মোতাবেক যাত্রী উঠাচ্ছেন লঞ্চে। দীর্ঘদিন পরে লঞ্চ চালু হওয়ায় লঞ্চ মালিক-শ্রমিকদের মাঝেও স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮৬ টি লঞ্চ রয়েছে। গত ৫ এপ্রিল থেকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল নৌরুটে। স্পিডবোট চলাচল বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম ভেঙে কিছু স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করেছিল। তবে গত ৪ মে স্পিডবোট দূর্ঘটনার পর নৌরুটে স্পিডবোট, ট্রলার চলাচল বন্ধ করতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে যায়। এরপর থেকে বন্ধ থাকে এসকল নৌযান। বিকল্প নৌযান না থাকায় যাত্রীদের শুধুমাত্র ফেরিতে পদ্মা পার হতে হয়েছে। দূর পাল্লার লঞ্চ বন্ধ থাকায় দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের এই নৌরুট ব্যবহার করে রাজধানী ও বাড়িতে যাওয়া-আসা করতে হয়েছে। ফলে যাত্রীদের অস্বাভাবিক চাপ তৈরি হয় নৌরুটে। যাত্রীচাপে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে অনেকটাই ব্যহত হয়।

বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ফেরিঘাট সূত্র জানিয়েছে, লঞ্চ চলাচল শুরু করায় ফেরিতে যাত্রীদের চাপ কমেছে। ফলে যানবাহন পারাপার সহজ হয়েছে। সকাল থেকেই যাত্রীরা লঞ্চে পার হচ্ছে। ফেরিতে যাত্রীর সংখ্যা কিছুটা কমেছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। সোমবার ভোর ৬টায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে লঞ্চ শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে লঞ্চ চলাচল শুরু। লঞ্চ চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com