তরফ নিউজ ডেস্ক : জরুরি ব্যবহারের জন্য চীনের সিনোভ্যাক করোনা ভাইরাসের টিকা অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ সংস্থা থেকে অনুমোদন পাওয়া এটি চীনের দ্বিতীয় টিকা। এর আগে অনুমোদন দেয়া হয়েছে সিনোফার্ম টিকা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, সিনোভ্যাক টিকা অনুমোদন দেয়ার ফলে তা এখন কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়ে গেছে। কোভ্যাক্স কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র দেশগুলোর কাছে টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, কোভ্যাক্স হলো কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন গ্লোবাল এক্সেস-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এই উদ্যোগ সম্মিলিতভাবে গ্রহণ করেছে গাভি, ভ্যাক্সিন এলায়েন্স, কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দেয়ার আগেই চীনে তৈরি সিনোভ্যাক অনেকে দেশে এরই মধ্যে ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে আছে চিলি, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, থাইল্যান্ড ও তুরস্ক।
এখন যাদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে তাদেরকে এই টিকা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই টিকারও দুটি ডোজ নিতে হবে। প্রথম ডোজ নেয়ার দুই থেকে চার সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার অর্থ হলো এই টিকা নিরাপত্তা, কার্যকারিতা এবং উৎপাদনের দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ লক্ষণযুক্ত ছিল এমন মানুষদের টিকা দেয়ার পর তাদের অর্ধেকের বেশিকে সুরক্ষা দেয় সিনোভ্যাক। ভয়াবহভাবে লক্ষণ দেখা দিয়েছে অথবা হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে এমন রোগীদের শতকরা ১০০ ভাগ সুরক্ষা দেয়। উল্লেখ্য, দেশে দেশে টিকার সঙ্কটের জন্য কোভ্যাক্স উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু সিনোভ্যাক্স অনুমোদন দেয়ার ফলে এ সমস্যা কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পণ্যের সুবিধা পাওয়া বিষয়ক সহকারী মহাপরিচালক মারিয়াঞ্জেলা সিমাও বলেছেন, বিশ্বজুড়ে টিকা প্রাপ্তি বিরাট এক সমস্যা হয়ে পড়েছে। এ সময়ে করোনার বিভিন্ন টিকা পেতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে বিশ্ব। তিনি টিকা উৎপাদনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, টিকা প্রস্তুতকারকদের প্রতি আমরা কোভ্যাক্স কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে অনুরোধ করছি। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে তাদের সহায়তা আশা করছি।
সিনোভ্যাক থেকে বলা হয়েছে, তারা মে মাসের শেষ নাগাদ দেশে ও বিদেশে কমপক্ষে ৬০ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করেছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৪৩ কোটি ডোজ এরই মধ্যে প্রয়োগ করা হয়েছে। সিনোভ্যাক টিকার প্রধান সুবিধা হলো এই টিকা মানসম্মত একটি রেফ্রিজারেটরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়। এর অর্থ হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই টিকা ব্যবহার অনেক বেশি সহজ হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রধানরা করোনা মহামারি মোকাবিলার জন্য ৫০০০ কোটি ডলারের আবেদন করার পর চীনের এই টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হলো।