রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ২০০৯ সালের সম্মেলনে বাদ পড়েন দলীয় পদ থেকে। সেনাসমর্থিত বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দলে এ অবস্থা হয় তার। এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থনে গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে বিজয়ী হন সুলতান মনসুর। তবে শপথ নেননি আলোচিত এই নেতা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা জানান, সুলতান মনসুর ফিরছেন তার পুরনো ঘর আওয়ামী লীগে; শিগগির রাজনীতিতে সক্রিয়ও হবেন। আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের প্যানেলকে বিজয়ী করতে সাবেক এই ভিপিকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
জানতে চাইলে সুলতান মনসুর বলেন, আমি তো ছাত্রলীগের প্যানেল থেকেই ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নেতা বানিয়েছেন। ছাত্রলীগের প্যানেলকে নির্বাচিত করার কোনো দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব এলে তা অবশ্যই গ্রহণ করব।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দুজন বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় সুলতান মনসুরের। এ সময় দুজন একান্তে কথা বলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে সুলতান মনসুর বলেন, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে আমার বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ হয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো আওয়ামী লীগ ছাড়িনি। আওয়ামী লীগ আমাকে বহিষ্কারও করেনি। সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি ভবিষ্যতে দেখা যাবে।’ প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন সদস্য ঘরে ফিরছেন সুলতান বলেন, ডাকসু নির্বাচনে সুলতান মনসুরসহ সাবেক দুই নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত শনিবার দলের একটি সভা শেষে ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গ উঠে আসে। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ওরা মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নিয়ে নামবে। আমরাও আখতারুজ্জামান ও সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে নামাব।
এ বিষয়ে সুলতান মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার নেত্রী। আমার শেষ ঠিকানা বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা। এখানে কোনো আপস নেই। তিনি বলেন, আমিও নেত্রী সম্পর্কে কোনো দিন কোনো কটু কথা বলিনি, নেত্রীও আমার নাম উচ্চারণ করে আমার সম্পর্কে কোনো দিন কটু কিছু বলেননি।
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শপথের বিষয়ে আমি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করি। হয়তো শপথ নেব। কারণ আমি আমার নির্বাচনী আসনের ভোটারদের অসম্মান করতে পারি না। শপথ কবে নিতে পারেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সপ্তাহখানেকের মধ্যে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দাওয়াতের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সুলতান মনসুর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত গ্রহণ করে গণভবনে যাওয়া উচিত।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করায় জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সুলতান মনসুর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলে বিএনপি তার সদস্য পদ বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিলে তার সদস্য পদ থাকবে না।
তথ্য সূত্র : দেশ রূপান্তর