শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীকে জলবায়ু ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাতে সম্মিলিত লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই এবং প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানে কমনওয়েলথ অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সোমবার প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ আহুত ‘এশিয়া রিজিওনাল কমনওয়েলথ হেডস অব গভর্নমেন্ট’-এর গোলটেবিল আলোচনায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে প্রধামনন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, কমনওয়েলথ সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই এবং প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে।’
গোলটেবিল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী তিন দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। যার মধ্যে বিশ্বব্যাপী টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তিবিদ্যার ওপর জোর দেয়া এবং জলবায়ু অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কমনওয়েলথের সদস্য এবং সিভিএফের (জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম) চেয়ারম্যান হিসেবে শেখ হাসিনা ঝুঁকির বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়াই করার জন্য সিওপি ২৬ এর আগে কয়েকটি পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম পরামর্শে বিশ্বব্যাপী সবুজ এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিকাশের পক্ষে তার মতামত তুলে ধরেন এবং সুদিনের প্রত্যাশায় বৃত্তাকার অর্থনীতিতে বিনিয়েগের কথা বলেন।
দ্বিতীয় পরামর্শে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রতি বিশেষ মনযোগ দেয়ার সাথে সাথে কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞান এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের বিধানসহ কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তির ওপর জোর দেয়ার আহ্বান জানান।
তৃতীয় পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু ঝুকিপূর্ণ দেশগুলোকে প্রশমন কার্যক্রম গ্রহণের ক্ষেত্রে জলবায়ু তহবিল থেকে সহায়তা প্রদানের কথা বলেন।
জলবায়ুর ক্ষতি প্রশমন এবং অভিযোজনের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের প্রশংসিত হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিশ্বে অ্যাডাপটেশন লিডার হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতি বছর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য নিজস্ব সম্পদ থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম-সিভিএফের চেয়ারম্যান এবং জিসিএ’র দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের হোস্ট হিসেবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা, স্থানীয়ভাবে অভিযোজন সমাধান এবং নদীভাঙনের শিকার লোকদের জন্য বাড়িঘর তৈরিসহ তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি।’
করোনা মহামারির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গোটা বিশ্ব অভূতপূর্ব এবং অনিশ্চিত এক মহামারি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও পরিস্থিতি একই। স্বাস্থ্য সংকটের বাইরেও এই মহামারি আরও অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। যার জন্য আমার সরকার জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’