শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪০ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: বৃহত্তর সিলেটের ১৯ সংসদীয় আসনে ২ হাজার ৮০৫টি কেন্দ্র এবং ১৩ হাজার ৪৯৬টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হবে ৩০ ডিসেম্বর (রোববার)। বিভাগের ১৯ আসনের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ প্রায় ৬৪ ভাগ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ১ হাজার ৫৭২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় রয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে ২১২টি কেন্দ্র। এর সবক’টিই মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত। নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ সূত্রে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ২ হাজার ৮০৫টি কেন্দ্রকে তিন স্তরে বিন্যাস করা হয়েছে- সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও অতি গুরুত্বপূর্ণ (অতি ঝুঁকিপূর্ণ)। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সাধারণ তালিকায় রয়েছে- ১ হাজার ২১টি। এরমধ্যে সিলেটে ৩৮৫টি, মৌলভীবাজারে ১৭৪, হবিগঞ্জে ২১১ এবং সুনামগঞ্জে ২৫১টি।
গুরুত্বপূর্ণ তালিকায় রয়েছে- ১ হাজার ৫৭২টি কেন্দ্র। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ছয়টি সংসদীয় আসনে ৯৯২টি ভোটকেন্দ্রের ৬০৭টি কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারে ১২৬টি, সুনামগঞ্জে ৪১৭ এবং হবিগঞ্জে ৪২২টি। আর অতি গুরুত্বপূর্ণ ২১২ কেন্দ্রের সবক’টি মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, যেসব কেন্দ্রে সংঘাত, সহিংসতা, দখল, হানাহানি, মারামারি হওয়ার আশঙ্কা কম-বেশি অনুসারে গুরুত্বপূর্ণ ও অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এসব কেন্দ্রের বিপরীতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট জেলা ও মহানগর পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এমন তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সাধারণ কেন্দ্রের চেয়ে অতিরিক্ত ফোর্স থাকবে সেসব কেন্দ্রে। তবে গোপনীয়তা রক্ষারার্থে নির্বাচনে ফোর্সের সংখ্যা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন সেসব কর্মকর্তারা।
সিলেট জেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ও অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র সংখ্যা চিহ্নিত করে সে মোতাবেক ফোর্স মোতায়েন করা হবে।
সিলেট নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা বলেন, নিরাপত্তার বিষয়টি কনফিডেন্সিয়াল। তবে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন। এছাড়া সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে গঠিত রিজার্ভ ফোর্স, কেন্দ্রভিত্তিক মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সও নিয়োজিত থাকবে।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল হক বলেন, নিরাপত্তা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিতের বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ৪০টি উপজেলা, ১টি সিটি করপোরেশন, ১৯ পৌরসভা ও ৩৩৮টি ইউনিয়ন নিয়ে সিলেট বিভাগের ১৯টি সংসদীয় আসনের কেন্দ্রেগুলোতে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন ৪৩ হাজার ২৪২ জন কর্মকর্তা। এরমধ্যে ২ হাজার ৮০৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১৩ হাজার ৪৭৯ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ২৬ হাজার ৯৫৮ জন পুলিং অফিসার।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগের ৪ জেলার ১৯টি আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৬৬ লাখ ২০ হাজার ৬০৬। এরমধ্যে পুরুষ ৩৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪০৫ জন এবং নারী ভোটার ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ২০১ জন।
সিলেটের ৬টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ২২ লাখ ৫২ হাজার ২৯৪ জন। এরমধ্যে ১১ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৪ পুরুষ এবং ১১ লাখ ৬৫০ জন নারী ভোটার রয়েছে। মৌলভীবাজারের ৪টি আসনে মোট ভোটার ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৬ লাখ ৫১ হাজার ৭৯৫ এবং নারী ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৭৬ জন।
সুনামগঞ্জ জেলার ৫টি আসনে মোট ভোটার ১৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৮ লাখ ২২ হাজার ৬০৭ এবং নারী ভোটার ৮ লাখ ২৩ হাজার ৪৭০ জন। হবিগঞ্জ জেলার ৪টি আসনে মোট ভোটার ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৪ জন। এরমধ্যে ৭ লাখ ১০ হাজার ৩৫৯ পুরুষ ও ৭ লাখ ১৫ হাজার ২০৫ জন নারী ভোটার তাদের ভোটের মাধ্যমে সংসদে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।