শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। শপথের পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেওয়া প্রথম ভাষণে ‘সব আমেরিকানদের প্রেসিডেন্ট’ হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন।
তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে সমর্থন করেননি আমি তাদের পক্ষেও লড়বো, ঠিক যতখানি আমি আমার সমর্থকদের জন্য লড়বো।’
শপথের পর ক্যাপিটল হিলে জো বাইডেন বলেন, ‘যারা আমাদের প্রচারণাকে সমর্থন করেছেন তাদের সকলের জন্য আমি বলতে চাই, আপনারা আমাদের ওপর যে বিশ্বাস রেখেছিলেন এজন্য আমি কৃতজ্ঞ।
যারা আমাদের সমর্থন করেননি তাদের সকলকে আমি বলতে চাই, আজ থেকে আমরা যে যাত্রা শুরু করছি, আমার কথা শুনুন, আমি ও আমার হৃদয়ের শুভেচ্ছা নিন। আপনার যদি এখনও দ্বিমত থাকে, তবে তাই হোক। এটাই গণতন্ত্র। এটাই আমেরিকা। আমাদের প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে মতবিরোধ করার অধিকারই সম্ভবত এই জাতির সবচেয়ে বড় শক্তি। তবুও স্পষ্টভাবে আমার কথাটি শুনুন। মতবিরোধকে অবশ্যই বিভাজনের দিকে পরিচালিত করবেন না। এবং আমি আপনাকে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি সব আমেরিকানদের প্রেসিডেন্ট হবো। সব আমেরিকান। এবং আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যারা আমাকে সমর্থন করেননি তাদের পক্ষেও আমি কঠোরভাবে লড়বো।’
অভিষেক ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক কিছু মেরামত করতে হবে। অনেক কিছু পুনরুদ্ধার, অনেক কিছু নিরাময় করতে হবে। অনেক কিছু গড়তে হবে, অনেক কিছু অর্জন করতে হবে।’
করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা এই সপ্তাহে চার লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসের খুব কম মানুষই এখনকার সময়ের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বা কঠিন সময় পার করেছে।’
করোনায় মৃত্যুবরণ করা সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। তিনি জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যত মানুষ জীবন হারিয়েছেন করোনার কারণে এক বছরে তত মানুষ মারা গেছে।
এ বছরের কথা বলতে গিয়ে তিনি ‘লাখ লাখ মানুষের চাকরি হারিয়ে ফেলা’ ও ‘জাতিগত ন্যায্যতার জন্য প্রায় ৪০০ বছরের দীর্ঘ লড়াই এখনও চলছে’ বলে উল্লেখ করেন।
‘এতো যন্ত্রণা ও কলহে’র মধ্যেও পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে, আত্মাকে পুনরুদ্ধার করতে এবং আমেরিকার ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে এখন শব্দের চেয়ে অনেক বেশি কিছু প্রয়োজন। আর তা হলো ঐক্য।’
তিনি বলেন, ‘ঐক্য ছাড়া শান্তি নেই, কেবল তিক্ততা এবং ক্রোধ আছে। কোনো অগ্রগতি নেই, কেবল আছে ক্লান্তিকর ক্ষোভ। ঐক্য ছাড়া কোনো জাতি হতে পারে না, কেবল বিশৃঙ্খল একটি রাষ্ট্র হবে। এখন আমাদের সংকট ও চ্যালেঞ্জের ঐতিহাসিক মুহূর্তে ঐক্যই এগিয়ে যাওয়ার পথ। একে অন্যের কথা শুনুন, একে অন্যের দেখাশোনা করুন, একে অন্যকে শ্রদ্ধা করুন।’
নারী ক্ষমতায়ন নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আজ, আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস শপথ নিয়েছেন। আমাকে বলবেন না যে পরিবর্তন সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দিনটি গণতন্ত্রের। এই দিনটি আমেরিকার। এই দিনটি ইতিহাস ও আশার দিন। বিভিন্ন সময়ে আমেরিকাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে, দেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আজকে আমরা গণতন্ত্রের বিজয় উদযাপন করছি।’