বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

জনসমাগম নিষিদ্ধ, রাত ১০টার পর বের হতে বারণ

তরফ নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় মানুষের চলাফেরা ও লোক সমাগমের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। এজন্য ১৮ দফা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে বেশি সংক্রমিত এলাকায় জনসমাগম পুরোপুরি নিষিদ্ধ করাসহ ধর্মীয়, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ সীমিত করা, গণপরিবহনে আসনের অর্ধেক যাত্রীবহন করার মতো নির্দেশনাও রয়েছে।

সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

সরকারের দেয়া ১৮ দফা নির্দেশনাগুলো হলো

১. সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণযুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হলো। বিয়ে/জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।

২. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে।

৩. মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে;

৪. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।

৫. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে।

৬) নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনপূর্বক ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

৭. বিদেশ হতে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

৮) স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো মাস্ক পরিধানসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

৯) শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।

১০) সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

১১) অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/ আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

১২) করোনায় আক্রান্ত/ করোনার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদেরও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।

১৩) প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক পরিধান না করলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১৪) জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান শিল্প কারখানাগুলো ৫০ ভাগ জনবল দ্বারা পরিচালনা করতে হবে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/ বয়স ৫৫-ঊর্ধ্ব কর্মকর্তা/কর্মচারীর বাড়িতে অবস্থান করে কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

১৫. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে;

১৬. সশরীরে উপস্থিত হতে হয় এমন যেকোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে;

১৭. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন সর্বদা বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশনার মধ্যে আরও রয়েছে- রাত দশটার পর অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে থাকা যাবে না। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আন্তঃজেলা যানবাহন চলাচল সীমিত করা। প্রয়োজনে বন্ধ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক প্রবেশ করতে পারবে। জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বাকি অফিস অর্ধেক জনবল দিয়ে পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

১৮. হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগের বেশি মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার কমে এসেছিল; কিন্তু মার্চের শুরু থেকে তা আবার দ্রুত বাড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৯০৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৫ জনের। দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭১৪ জনে। তাদের ৮ হাজার ৯০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মহামারীর নতুন ধাক্কা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে গতকাল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com