রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১০ অপরাহ্ন
চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের পূর্ব সুন্দরপুর গ্রামে রিমা আক্তার (২৪) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের স্বামী মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। রবিবার (১৭ আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানার এসআই জিকরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই নিহতের স্বামী মুজিবুর রহমান, বাবা রজব আলী, মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর স্থানীয় জনতা অভিযুক্ত ভাবি রুজিনা বেগমসহ দুই নারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও পরকীয়া প্রসঙ্গ: স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে প্রবাস থেকে দেশে ফেরেন মুজিবুর রহমান। দেশে ফেরার পর থেকেই স্ত্রী রিমার সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। শনিবার রাতে মুজিবুর রহমানের পরকীয়া নিয়ে গ্রামে সালিশ বৈঠক হয়।
বৈঠকে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় তিনি অপমানিত বোধ করেন। নিহতের চাচা কাউছার মিয়া অভিযোগ করে বলেন-আমার ভাতিজি রিমাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারপর নাটক সাজাতে মরদেহ সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। নিহতের মা সুফিয়া বেগমও একই অভিযোগ করে বলেন- মুজিবুর রহমানের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল তার ভাবি রুজিনার সঙ্গে। এ নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে রিমা ও মুজিবুরের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। আমার মেয়েকে নির্যাতন করে অবশেষে মেরে ফেলা হয়েছে। বিয়ের তিন বছর, দুই কন্যাশিশুর জননী রিমা নিহত রিমা আক্তারের স্বজনরা জানান, তিন বছর আগে খাজিরখিল গ্রামের মুদিমাল ব্যবসায়ী মহিবুর রহমানের ছেলে সু্ন্দরপুর গ্রামের রজব আলীর ছেলে, মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ৪ লাখ টাকা কাবিনে রিমার বিয়ে হয়।
তাদের সংসারে রয়েছে দুই কন্যাশিশু- সায়মা (২) ও সাবিহা (২)। চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম বলেন- খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে রিমার মৃত্যুর খবরে হাজারো মানুষ নিহতের বাড়িতে ভিড় জমায়। অনেকেই এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে অভিযুক্ত স্বামী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।