বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন
তরফ স্পোর্টস ডেস্ক : ‘জয়ের বিকল্প নেই’, ভারত ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বেশ দৃঢ় কণ্ঠে বলে গেলেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। প্রবল কৌতূহলও জাগালেন বাংলাদেশর অলরাউন্ডার। প্রস্তুতি ম্যাচে ‘জিততে হবেই’ মনোভাব সাধারণত থাকে না কোনো দলেই। সাইফের কথা শুনে হাসলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, “বয়স কম তো, হয়তো এক্সাইটমেন্ট থেকে বলে ফেলেছে।”
বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে কার্ডিফে মঙ্গলবার ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অধিনায়ক যা জানালেন, ম্যাচটি বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়েই দেখছে, তবে সেই গুরুত্ব কেবল প্রস্তুতির দিক থেকে। কারণ সেরা দলের বিপক্ষে খেললে নিজেদের ঘাটতির জায়গা যে স্পষ্ট হয় অনেক সময়।
এমনিতে বাংলাদেশ ও ভারতের লড়াইয়ে এখন আর কোনো ‘সাধারণ’ ম্যাচ নেই। ক্রিকেটে দুই দেশ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নয়, তবে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এই দুই দলের ম্যাচের মতো উত্তেজনা ক্রিকেট বিশ্বে খুব কম লড়াইয়েই ছড়িয়েছে। এবার প্রস্তুতি ম্যাচ বলেই হয়তো সেই উত্তেজনার আঁচ ছিল না ততটা। কিন্তু সোমবার দুপুরে কার্ডিফে সংবাদ সম্মেলনে সাইফের কণ্ঠে শোনা গেল ঝাঁজ।
“প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। গতকালকের ম্যাচটি যেহেতু বৃষ্টির কারণে খেলতে পারিনি, আগামীকালের ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টের আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার আরেকটি সুযোগ পাচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি ম্যাচই বিবেচনায় নিতে হবে। জয়ের বিকল্প নেই। কালকে আমরা প্রতিটি ক্রিকেটার জয়ের জন্য মাঠে নামব।”
সাইফের কথার সুরে যে আগুন ছিল, তাতে পুরোপুরিই জল ঢেলে দিলেন মাশরাফি। প্রস্তুতিটা পর্যাপ্ত হলেই খুশি বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“এটার নাম প্রস্তুতি ম্যাচ কেন? কারণ এখানে প্রস্তুতিই সব। এসব ম্যাচে কি চাওয়ার থাকে? আমার মতে, মূলত দুটি ব্যাপার। প্রথমত, যদি কারও কোনো কিছু ইস্যু থাকে, সেটি ঠিক করা। আর, দল হিসবে ঘাটতির জায়গাগুলো বোঝা। কোথায় কাজ করা উচিত, কি ঠিক করা দরকার, এসব জানা।”
“আমি যে মজা করে বলি, এসব ম্যাচে হারলেই ভালো, সেটার একটি সিরিয়াস কারণও আছে। হারলেই কিন্তু ভুলগুলো ফুটে ওঠে, ঘাটতি স্পষ্ট হয়। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে এই ভারতের কাছেই আমরা উড়ে গিয়েছিলাম প্র্যাকটিস ম্যাচে। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে সিডনির ক্লাব দলের কাছে চারটি ম্যাচ হেরেছিলাম। কিন্তু সেসবে আমাদের উপকার হয়েছিল।”
দলের সঙ্গে থাকা নির্বাচক হাবিবুল বাশার তো মাশরাফির মতো গুরুত্ব দিতেও নারাজ এই ম্যাচকে।
“আগের ম্যাচের আগেও বলেছি, আমাদের মূল প্রস্তুতি আয়ারল্যান্ডেই হয়ে গেছে। আপনি যতো চেষ্টাই করেন, এখানকার এই প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে মূল ম্যাচের মতো আবহ, উত্তেজনা, সিরিয়াসনেস আসবে না। সেটা উচিতও না। বরং কেউ যেন ইনজুরড না হয়, সেই খেয়াল রাখা জরুরি।”
“আমি মনে করি এই ম্যাচকে খুব সহজভাবে নেওয়া উচিত। একদম টেনশন মুক্ত থেকে মাঠে নামা উচিত। উইকেটে কিছু সময় কাটালে বা এখানে বোলিং করলে মাঠের স্বাদটা নেওয়া হলো, এতটুকুই যথেষ্ট।”
চাপমুক্ত থেকে খেলার দিক থেকে ভাবলে, প্রস্তুতি ম্যাচটি ভারতের বিপক্ষে না হলেই হয়তো ভালো হতো। দুই দলের সাম্প্রতিক অতীতের কারণেই এই ম্যাচে জয়টা অনেকের কাছে মূখ্য। তবে মাশরাফি খুশি ম্যাচটি ভারতের বিপক্ষে হওয়াতেই।
“প্রস্তুতি তো সম্ভব সেরাভাবেই নেওয়া উচিত। ভারত টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট দল। পারতপক্ষে কোনো ঘাটতি নেই তাদের দলে। এমন দলের বিপক্ষে খেললে নিজেদের অবস্থান জানা যাবে, দুর্বলতা ও ঘাটতি বোঝা যাবে, উন্নতির জায়গা বের হবে।”
“অবশ্যই আমরা চাইব না হারতে। কিন্তু আসল ব্যাপার হলো প্রক্রিয়া। অনুশীলন করা। সেটি ঠিক করে যদি জয়ও আসে, তাহলে তো দারুণ। কিন্তু বেশি জরুরি, যত বেশি জনের সম্ভব অনুশীলন ভালো করা।”