চেস্টার লি স্ট্রিটের দা রিভারসাইড ডারহামে বুধবার ১১৯ রানে জিতেছে ইংল্যান্ড। ৩০৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৫ ওভার বাকি থাকতে ১৮৬ রানে গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করার টানা তিনটি সুযোগ হাতছাড়া করল তারা।
শেষ চারে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ডের সঙ্গী হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে আছে নিউ জিল্যান্ডই। নেট রাট রেটে তাদের পেছনে ফেলে সেমি-ফাইনালে যেতে বাংলাদেশকে বিশাল ব্যবধানে হারাতে হবে পাকিস্তানকে।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন বেয়ারস্টো। তার দেখানো পথ ধরে হাঁটতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। অনেক বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়েও ওয়েন মর্গ্যানের দল ৮ উইকেটে করতে পারে ৩০৫ রান। ব্যাটিং ব্যর্থতায় রান তাড়ায় সেভাবে জয়ের সম্ভাবনাই জাগাতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। টানা তৃতীয় হারের স্বাদ পাওয়া দলটি সবশেষ দুই ম্যাচে অলআউট হলো দুইশ রানের নিচে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে ইংল্যান্ডকে ভালো শুরু এনে দেন জেসন রয় ও বেয়ারস্টো। পাঁচ পেসার ও এক স্পিনারে গড়া নিউ জিল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ পারেনি তাদের ভাবাতে। নতুন বলে দ্রুত রান তুলে দলকে এগিয়ে নেন দুই ওপেনার।
ষষ্ঠ বোলার হিসেবে আক্রমণে আসা জিমি নিশাম ভাঙেন ১২৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। ফিরিয়ে দেন ৮ চারে ৬০ রান করা রয়কে।
শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন জো রুট। দ্রুত জমে যায় ছন্দে থাকা বেয়ারস্টোর সঙ্গে তার জুটি। ৩০ ওভারে ১ উইকেটে ১৯৪ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড়ায় ইংল্যান্ড। পরের ওভারের প্রথম বলে রুটকে কটবিহাইন্ড করে জুটি ভাঙেন বোল্ট।
৪৬ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করা বেয়ারস্টো ৯৫ বলে তুলে নেন সেঞ্চুরি। এরপর বেশি দূর এগোতে পারেননি। বোল্ড হয়ে যান দলে ফেরা ম্যাট হেনরির দারুণ এক ডেলিভারিতে। ৯০ বলে ১৫ চার ও এক ছক্কায় ইংলিশ ওপেনার করেন ১০৬ রান।
মিডল অর্ডার পারেনি দৃঢ় ভিত কাজে লাগাতে। নিয়মিত উইকেট হারানোয় ভাটা পড়ে রানের গতিতে। শেষের দিকে মর্গ্যানের ৪২ রানের ওপর ভর করে তিনশ ছাড়ায় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ। ৯ উইকেট হাতে থাকার পরও স্বাগতিকরা শেষ ২০ ওভারে তুলতে পারে কেবল ১১১ রান।
রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি নিউ জিল্যান্ডের। আবারও ব্যর্থ দুই ওপেনার। বাজে শুরুর পর দলকে টানছিলেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর। দলের সেরা এই দুই ব্যাটসম্যান থামেন রান আউট হয়ে।
বিশ্বকাপে নিজের ছায়া হয়ে থাকা কিপার-ব্যাটসম্যান টম ল্যাথামের ব্যাটে মিলেছে ছন্দে ফেরার আভাস। নিশামের সঙ্গে গড়েছেন ইনিংসের একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। পরের কোনো ব্যাটসম্যান খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি ল্যাথামকে। ৫ চারে ৫৭ রান করে তিনি ফিরে যাওয়ার পর বেশিদূর এগোয়নি নিউ জিল্যান্ডের ইনিংস।
৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সেরা বোলার গতিময় পেসার মার্ক উড।
৯ ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। সমান ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রয়েছে নিউ জিল্যান্ড। ভারতের বিপক্ষে তাদের একটি ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে।
টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাওয়া বেয়ারস্টো টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জিতলেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩০৫/৮ (রয় ৬০, বেয়ারস্টো ১০৬, রুট ২৪, বাটলার ১১, মর্গ্যান ৪২, স্টোকস ১১, ওকস ৪, প্লানকেট ১৫*, রশিদ ১৬, আর্চার ১*; স্যান্টনার ১০-০-৬৫-১, বোল্ট ১০-০-৫৬-২, সাউদি ৯-০-৭০-১, হেনরি ১০-০-৫৪-২, ডি গ্র্যান্ডহোম ১-০-১১-০, নিশাম ১০-১-৪১-২)
নিউ জিল্যান্ড: ৪৫ ওভারে ১৮৬ (গাপটিল ৮, নিকোলস ০, উইলিয়ামসন ২৭, টেইলর ২৮, ল্যাথাম ৫৭, নিশাম ১৯, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩, স্যান্টনার ১২, সাউদি ৭*, হেনরি ৭, বোল্ট ৪; ওকস ৮-০-৪৪-১, আর্চার ৭-১-১৭-১, প্লানকেট ৮-০-২৮-১, উড ৯-০-৩৪-৩, রুট ৩-০-১৫-০, রশিদ ৫-০-৩০-১, স্টোকস ৫-০-১০-১)
ফল: ইংল্যান্ড ১১৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: জনি বেয়ারস্টো