তরফ নিউজ ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন বদলে দিয়েছে সবকিছু। বড়দিনে উৎসবের আমেজে মেতে ওঠবে বৃটেন এমন প্রস্তুতির মধ্যেই খবর আসে নতুন স্ট্রেইনের। দুনিয়ার অনেক দেশ বৃটেনের সঙ্গে বন্ধ করে দেয় বিমান চলাচল। উদ্বেগ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। নতুন স্ট্রেইন সনাক্ত হওয়ার আগেই ভাইরাস নিয়ন্ত্রন করতে বিশ্বে সবার আগে তড়িঘড়ি করে ফাইজারের টিকা আনে বৃটেন। মানুষের মাঝে প্রয়োগও শুরু করা হয় এ মাসের শুরুতে। পরিকল্পনা ছিলো দীর্ঘ দিন ধরে লকডাউন আর নিয়ম শৃঙ্খলায় বন্দি থাকা দেশবাসীকে বড় দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ করে দেওয়া। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় বড় দিন পালন করতে ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর নিয়ম কানুন শিথিল করা হবে।
সরকারের এমন আশ্বাসে দেশের মানুষ উপহার, গিফটকার্ড থেকে সব কিছু কেনাকাটা করছিলেন। পাশাপাশি তোড়জোড় চলছিল ক্রিসমাস পার্টির আয়োজন নিয়েও। সবকিছু যখন শেষের দিকে, ঠিক তখনি সব ওলট-পালট হয়ে যায় এক নিমিষে। নিয়ম শিথিলের বদলে আরো কঠোর করা হয়। যার ফলে এবারের ক্রিসমাস (বড়দিন) পালন করতে পারছেনা দেশটির অধিকাংশ মানুষ। এখানেই শেষ নয়, ভয়াবহ রূপ নেয়া নতুন করোনাভাইরাস স্ট্রেইন এখন দেশটিকে ইউরোপ থেকে এক ঘরে ফেলেছে।
বৃটেনে ভাইরাস স্ট্রেইন গত সেপ্টেম্বরে শনাক্ত হয়, কিন্তু তিন মাস পর ডিসেম্বরে তা প্রকাশ পায়। ভাইরাস স্ট্রেইন এর কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় ক্রিসমাসের প্রায় এক সপ্তাহ আগে লন্ডন শহরসহ দক্ষিন পূর্ব ইংল্যান্ডে টিয়ার-৪ লকডাউন সমতুল্য বিধিনিষেধ জারি করেন বরিস জনসন। এ খবর মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বৃটেনের সাথে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। যার ফলে দেশটি ইউরোপ থেকে এক ঘরে হয়ে পড়ে। শুধু ইউরোপ নয়, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের বহুদেশ ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়। আচমকাই বৃটেনের প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্স আকাশ পথের পাশাপাশি সড়ক পথ বন্ধ করে দিলে খাদ্য সংকটের আশষ্কা দেখা দেয় দেশটিতে। ডোভার বন্দরে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। এমন পরিস্থিতিতে বরিস জনসনের সরকার বেকায়দায় পড়ে জরুরি বৈঠকে বসে। পরে উভয় দেশ একমত হয় করোনা পরীক্ষা করে লরির ড্রাইভাররা ঢুকতে পারবে।
এদিকে, লন্ডন শহরসহ দক্ষিণ পূর্ব টিয়ার-৪ লকডাউন সমতুল্য বিধিনিষেধ জারি থাকায় এবছর আমেজহীন ক্রিসমাস (বড়দিন) নিউ ইয়ার (নববর্ষ) পালন করতে যাচ্ছেন ব্রিটিশরা। বর্তমানে দেশের ব্যস্ততম লন্ডন শহরকে চেনাই যাচ্ছে না। দেশটিতে জরুরি প্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া বন্ধ রয়েছে সকল দোকান, মার্কেট। রাস্থাঘাটে নেই মানুষের হই হুল্লোড়। রেস্তুোরা-পাবে নেই পার্টি। ফুল বেচাকেনা না হওয়ায় প্রচুর অবিক্রিত ফুল রয়ে গেছে সুপার শপগুলোতে। বৃটেনে টিয়ার-৪ জারি ও ফ্লাইট বন্ধ থাকায় পরিবারে আলাদা বসবাসকারী সদস্যদের সাথে নিয়ে ক্রিসমাস পালন করতে পারছেন না ইংলিশরা। নতুন ভাইরাস ক্রিসমাস স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করেছে বৃটিশদের। যার ফলে এক ঘরে থাকা বৃটেনবাসীকে এবার আমেজহীন ক্রিসমাস পালন করতে হচ্ছে।