শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : দেশের কোনো কোনো জেলা প্রশাসক নিজেদের ‘মোঘল সম্রাট’ মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাংলা ট্রিবিউন’র স্থানীয় প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে তার বাসার দরজা ভেঙে তুলে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্ট) মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে করা রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এ ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের কাছে বেশ কিছু বিষয় জানতে চেয়েছে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রবিবার এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই ঘটনায় যা জানতে চেয়েছে সেগুলো হলো- সাংবাদিক আরিফুল ইসলামমের বিরুদ্ধে অভিযোগ কে দিয়েছে, সাজা ও দণ্ডের আদেশের অনুলিপি, মোবাইল কোর্ট না টাস্কফোর্স কারা এই অভিযান পরিচালনা করেছে, রাতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আইন অনুসরণ করা হয়েছে কি না। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এ বিষয়ে জানাবেন। সোমবার এর ওপর আদেশ হতে পারে।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে সায়েদুল হক সুমন ছাড়াও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য।
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘শুনানিতে বলেছি, কোনো কোনো ডিসি নিজেদের ‘মোঘল সম্রাট’ মনে করেন। যেভাবে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে তা সম্পুর্ণ বেআইনি। আদালত এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, একজন সাংবাদিককে ধরতে মধ্যরাতে তার বাসায় ৪০ জনের বাহিনী গেল। এতো বিশাল ব্যাপার! তিনি (আরিফ) দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী না কি!’
সাংবাদিক আরিফ, তার স্ত্রী ও সহকর্মীদের অভিযোগ, শুক্রবার মধ্যরাতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা আরিফের বাড়িতে হানা দিয়ে দরজা ভেঙে তাকে তুলে নিয়ে যায়। বাড়িতে ‘আধা বোতল মদ’ ও ‘দেড়শ গ্রাম গাঁজা’ রাখার অভিযোগ তুলে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আরিফকে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় সাংবাদিকমহলসহ দেশ জুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রবিবার এ রিট আবেদন করেন।
আবেদনে ক্ষতিপূরণসহ রুলের আর্জি জানানোর পাশাপাশি কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরিফুল ইসলামকে রোববার জামিন দেয় কুড়িগ্রামের সংশ্লিষ্ট একটি আদালত। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহারের ঘোষণা এসেছে।