বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নতমানের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহে ‘ফি’ নির্ধারণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
কত টাকা ফি নির্ধারণ করা হবে বা সব কিছু যাচাই-বাছাইয়ে করণীয় নির্ধারণের জন্য বিষয়টি কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদর জন্য এনআইডি সেবা কার্যক্রম শুরুর পর ইতোমধ্যে চারটি দেশে প্রায় সাড়ে সাতশটি আবেদন পেয়েছে এনআইডি উইং।
নআইডি উইং ডিজি জানান, নভেম্বরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনলাইনে ভোটার করার কার্যক্রম হাতে নেওয়ার পর পরই করোনাভাইরাস মহামারী দেখা দেয়। এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়া থেকে ৪৮ জন, সৌদি আরব থেকে ৩৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৫৩০ জন এবং যুক্তরাজ্য থেকে ১২১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি অনলাইনে ভোটার হতে আবেদন করেছেন।
প্রবাসীদের এনআইডি সেবায় ফি নেওয়ার বিষয়ে সাইদুল ইসলাম বলেন, “প্রবাসে স্মার্ট কার্ড বিতরণ সেবার কাজটি করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য প্রবাসীরাই এই সেবা নিতে ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলছে।”
দেশে নাগরিকদের প্রথমবার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিনা ফিতে বিতরণ করা হয়। তবে হারানো, সংশোধন বা ডুপ্লিকেট এনআইডি সংগ্রহে ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
সাইদুল ইসলাম বলেন, “প্রবাসীরা নানা আলোচনায় বলেছেন, আমরা ফ্রি কিছু চাই না। এটি আমরা টাকা দিয়েই নিতে চাই। এজন্য প্রবাসে এ সেবার জন্য খুব বেশি ফি ধরা হবে না। একটা টোকেন ফি ধরা হলে এর গুরুত্বও থাকবে।
“ফি কমিশনের ফান্ডে যাবে না। এই টাকা সরকারের কোষাগারে জমা হবে। আগামী ২৮ তারিখে কমিশন সভায় বিষয়টি আলোচনায় রাখা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।”
গত বছর নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সেবা চালু করা হয়। সবশেষ এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যে এ সেবা কাজ উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
প্রবাসীরা অনলাইনে ভোটার নিবন্ধনে জন্য services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।
এ যুগান্তকারী পদক্ষেপ চালুর পর মহামারী শুরু হওয়ায় দূতাবাসের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক নেওয়ার কাজ ‘থমকে’ যায়।
প্রবাসে দূতাবাসের মাধ্যমে এনআইডি সেবা প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও মহামারীর কারণে তা এগোয়নি। শিগগির এ সেবা চালুর প্রক্রিয়া রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে তাদের আবেদনের পক্ষে দেওয়া দলিলাদি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে, ঠিকানা ও তথ্যাদি সঠিক কি না যাচাই করা হচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ছবি তোলা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য কাজ এগিয়ে নিতে গেল সপ্তাহেও পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ইসি সচিবালয়।
সাড়ে ৬ কোটি স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট, অনলাইন সেবা ৩৫ লাখ
দেশের প্রায় ১১ কোটি ভোটারের মধ্যে বর্তমানে সাড়ে ৬ কোটি নাগরিকের স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট করে উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।
মহামারীর মধ্যে দেশে ২৭ এপ্রিল থেকে এনআইডি অনলাইন সেবা চালুর পর ৩৫ লাখেরও বেশি নাগরিক এনআইডি সেবার জন্যে আবেদন করেন। তাদের অধিকাংশই ডাউনলোড করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিতে পেরেছেন।
এনআইডি উইং ডিজি জানান, এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ ১৫ হাজার নাগরিক অনলাইনে সেবা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
এছাড়া ২৫ লাখ ৩৫ হাজার নাগরিক নিজে নিজে এনআইডি ডাউনলোড করেছেন; নতুন ভোটার হতে আবেদন করেছেন ১ লাখ ১৩ হাজার জন এবং ৪ ১ হাজার নাগরিক হারানো এনআইডি তোলার জন্য আবেদন করেছেন ।