বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনার করা মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। দুই মাসেরও বেশি সময় পর বৃহস্পতিবার আটজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রধান আসামি করা হয়েছে ছাত্রলীগ নেতা সাইফুরকে। চার্জশিটভুক্ত অন্যরাও ছাত্রলীগ কর্মী।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটির চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরের শাহপরাণ (রহ.) থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
সাইফুর ছাড়াও চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন, মামলার এজাহারনামীয় আসামি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক, হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর, দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম, কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুম, মিসবাহ উর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিন। এর মধ্যে রাজন ও আইনুদ্দিন ছাড়া অপর ছয়জন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
এ তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, চার্জশিট দাখিলের প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানিয়ে দুপুর ১২টায় নগরের শাহজালাল উপশহরের এসএমপির উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হবে।
তিনি বলেন, মামলার আসামিদের ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন পেতে বিলম্ব হওয়ায় আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়ার তিনদিনের মাথায় পুলিশ আদালতে চার্জশিট প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকায় এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে কয়েকজন ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
ঘটনার পরদিন তার স্বামী শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগকর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘটনাটি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলে সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে আসামিদের ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ ও র্যাব।
১ ও ৩ অক্টোবর সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান ওরফে রাজন ও আইনুদ্দিন নামের আরও দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যায়।
বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে থাকাকালে আসামিদের মধ্যে সাইফুর, তারেক, রনি ও অর্জুন ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন। ধর্ষণে সহায়তার কথা স্বীকার করেন রবিউল ও মাহফুজুর। অন্য দুজনও স্বীকারোক্তি দেন।