সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১২:০৮ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সংসদীয় আসনের খসড়া সীমানা নিয়ে দাবি-আপত্তি শুনানিতে ব্যাপক উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে নির্বাচন কমিশন ভবনে।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিন ও অন্য কমিশনারদের উপস্থিতিতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের পক্ষে-বিপক্ষে বিএনপির দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
শুনানির একপর্যায়ে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার সমর্থকদের সঙ্গে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের হাতাহাতি শুরু হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ইসি কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ইসি সচিব আখতার আহমেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের শুনানি শেষ ঘোষণা করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন।
রুমিন ফারহানার ক্ষোভ
শুনানি শেষে সাংবাদিকদের কাছে রুমিন ফারহানা বলেন, “যেটা ১৫ বছরে হয়নি সেটা আজ হলো। আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যে নেতাকর্মীদের জন্য ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারা এখন আমাকে ধাক্কা দেয়। নির্বাচনের আগে সীমানা নিয়ে নিজের দলে এমন পরিস্থিতি হলে নির্বাচনে কী হবে অনুমেয়।”
রুমিন আরও বলেন, “আমি যেহেতু একজন আইনজীবী, আমার কেস আমি নিজেই উপস্থাপন করেছি। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ এর প্রার্থী ২০-২৫ জন মিলে গুন্ডা-পান্ডার মতো আচরণ করেছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জাজনক।”
খসড়ার বিরোধিতা
শুনানিতে রুমিন ফারহানা ইসির প্রকাশিত খসড়ার পক্ষে যুক্তি দেন। অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিএনপি নেতা খুর্শিদ আলম, অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম, অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেনসহ আরও কয়েকজন খসড়ার বিপক্ষে অবস্থান নেন। তারা অভিযোগ করেন, বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন—বুধন্তি, চান্দুরা ও হরষপুর—ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে, যা তাদের উপজেলাকে খণ্ডিত করছে।
এনসিপি কর্মীদেরও মারধরের অভিযোগ
হাতাহাতির সময় উপস্থিত এনসিপি কর্মীদের ওপরও হামলা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এনসিপি নেতা প্রকৌশলী আমিনুল হক চৌধুরী, মুস্তফা সুমন ও আতাউল্লাহ আহত হয়েছেন।
প্রকৌশলী আমিনুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “রুমিন ফারহানার লোকজন আমাদের আক্রমণ করেছেন। আমাদের অপরাধ শুধু এই যে আমরা দাবি নিয়ে ইসিতে এসেছি। এজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সামনেই আমাদের পেটানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে রুমিন ফারহানাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তারা কি এনসিপি-জামায়াত ছিল, নাকি গুন্ডা-মাস্তান ছিল সেটা আমরা দেখিনি।”
বাইরে হট্টগোল, প্রস্তুত জলকামান
শুনানিকালে নির্বাচন ভবনের বাইরেও ব্যাপক হট্টগোল হয়। বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে তাদের গেটের সামনে থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। এমনকি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভবনের সামনে জলকামানও প্রস্তুত রাখা হয়।