বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ অপরাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক : তাকে নিয়ে সমালোচনা বাসা বেঁধেছিল অনেক। সামর্থ্যে নিয়ে সংশয় না থাকলেও গত কয়েক বছরে তামিমের ‘ডট’ বল খেলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দাবি উঠেছিল তাকে দল থেকে বাদ দেয়ারও। তবে সবকিছুর জবাব দিতে ব্যাটটাকেই বেছে নিলেন তামিম ইকবাল।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া ইনিংসে তামিম যেন জানান দিলেন তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। ৪৬তম ওভারে যখন ক্যাচ আউট হয়ে সাজঘরে ফেরত যান তামিম। দুর্দান্ত সব শট খেলে ওই সময় তার নামের পাশে লেখা হয়েছে ১৩৬ বলে ১৫৮ রান। ১১ বছর আগে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই তার করা বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫৪ রান ছাড়িয়ে যাওয়া গেছে তাতে।
তামিমের এমন দুর্দান্ত ইনিংসের পর মুশফিকুর রহিমের ফিফটি, কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। তবুও বাংলাদেশের রানটা আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছায়নি শেষদিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায়। লিটন দাসের দুর্ভাগ্যজনক আউট আর তামিমের ভুলে শান্তর রান আউটেও দায় আছে কিছুটা।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ৩২২ রান। আগের ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের থেকে ১ রান বেশি করে। এতবড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে তিনাশি কামুনহুকামুই ছাড়া কেউই তেমন বড় সংগ্রহ গড়তে পারেননি জিম্বাবুয়ের টপ অর্ডারদের। ৫ চার ও ২ ছক্কায় এই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ৭০ বলে ৫১ রান। সিকান্দার রাজা রানটা বাড়িয়ে যান ৫৭ বলে ৬৬ রান করে। মাশরাফীর বলে আউট হন এই ব্যাটসম্যান। তার এই ইনিংসটাই দলের পক্ষে হয়ে থাকে সর্বোচ্চ।
যার সূত্র ধরেই ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত জমিয়ে তুলেছিলেন ডোনাল্ড তিরিপানো ও মুতুমভাজি। বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধোনা করে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান তারা। যদিও শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি। শেষ পাঁচ ওভার থেকে ৬২ রান তুলে নেয় তারা। তবুও জয়টা পায়নি।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯ রানের। বোলিংয়ে আসেন আল আমিন হোসেন। প্রথম দুই বলে এক রান নেয়ার পর তৃতীয় বলে আউট হয়ে যান মুতুমভাজি। এরপরই টানা দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে জিম্বাবুয়েকে জয়ের আশা দেখাতে থাকেন তিরিপানো। কিন্তু পরের দুই বলে এক রান দিয়ে তা আর হতে দেননি আল আমিন হোসেন।
ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নিয়ে ২৮ বলে ৫৫ রান করেন তিরিপানো। আর ২১ বলে ৩৪ রান করে শেষ ওভারে সাজঘরে ফেরত যান মুতুমভাজি। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শ্বাসরুদ্ধ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পায় ৪ রানে। এতে নিশ্চিত হয় সিরিজও।
বাংলাদেশ দলের স্পিনাররা এ ম্যাচে দারুণ বোলিং করলেও পেসাররা ছিলেন চরম ব্যর্থ। তাইজুল ইসলাম ১০ ওভারে ৫২ রানে নেন ৩ উইকেট। মিরাজ ৭ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ২৫ রান খরচায় তুলে নেন ১ উইকেট। মাশরাফী তার ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেও আল আমিন-শফিউলরা রান খরচায় ছিলেন উদার। আল আমিন ১০ ওভারে ৮৫ রান ও শফিউল ৯ ওভারে ৭৬ রান খরচা করে নেন একটি করে উইকেট।
স্কোর
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ৩২২/৮ (তামিম ১৫৮, লিটন ৯, শান্ত ৬, মুশফিক ৫৫, মাহমুদউল্লাহ ৪১, মিঠুন ৩২*, মিরাজ ৫, মাশরাফি ১, তাইজুল ০, শফিউল ৫*; মুম্বা ২/৬৪, টিশুমা ১/৩৫, টিরিপানো ২/৫৫, মাধেভেরে ১/৩৮, সিকান্দার ০/৫৯, উইলিয়ামস ০/৩৫, মুটমবোডজি ০/৩৪)
জিম্বাবুয়ে : ৫০ ওভারে ৩১৮/৮ (কামুনহুকামউই ৫১, চাকাভা ২, টেইলর ১১, উইলিয়ামস ১৪, মাধেভেরে ৫২, সিকান্দার ৬৬, মুটুমবামি ১৯, মুটমবোডজি ৩৪, টিরিপানো ৫৫*, মুম্বা ০*; মাশরাফি ১/৫২, শফিউল ১/৭৬, মিরাজ ১/২৫, আল-আমিন ১/৮৫, তাইজুল ৩/৫২, মাহমুদউল্লাহ ০/২২)
ফল : বাংলাদেশ ৪ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
ম্যাচসেরা : তামিম ইকবাল।