শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন চেয়েছেন ড. ইউনূস ধান ক্ষেত থেকে অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার জমি নিয়ে বিরোধ; দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত দোকান বাকীর টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : বৃদ্ধ নিহত হবিগঞ্জে হত্যা মামলা, আ.লীগ সভাপতিসহ ২শ জন আসামি গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে শামীম ওসমান লুকিয়ে থাকার গুঞ্জন, তাল্লাশি শেষে যা বলছে পুলিশ নগদ দুই লাখ টাকার বেশি তোলা যাবে না এ সপ্তাহে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সারাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর গণভবনের মাছ-হাঁসও নিয়ে গেল জনতা, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন, ছাড়লেন দেশ

প্রাথমিকের প্রধান দশম, সহকারীর ১২তম গ্রেডের ঘোষণা আসছে

তরফ নিউজ ডেস্ক : প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তনের প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা প্রস্তাবনায় সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেড, আর প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নতুন প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদাপূর্ণ গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন সহকারী শিক্ষকরা। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের এ দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়ায় আন্দোলন থেকে সরে আসেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের মর্যাদাপূর্ণ গ্রেড প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। এটিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের বর্তমান ১৪তম গ্রেডের পরিবর্তে ১২তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের পরিবর্তে দশম গ্রেডে উন্নীত করতে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এ প্রস্তাবনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের সম্মানজনক গ্রেডে অন্তর্ভুক্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, শিক্ষকদের নতুন গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাবনা তৈরি হয়েছে। এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখন উভয় মন্ত্রণালয় সভা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির হলেও তারা বেতন পান ১১তম গ্রেডে। অথচ দ্বিতীয় শ্রেণির অন্য সব চাকরিজীবী দশম গ্রেডে বেতন পান। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্তরা সবাই দশম গ্রেড বেতন পেলেও শুধু সরকারি প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১১তম গ্রেডে। ফলে প্রধান শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন দশম গ্রেডে বেতনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকরা যোগদানের পর প্রশিক্ষণবিহীন হওয়ায় তাদের ১৫তম গ্রেডে বেতন দেয়া হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পান ১৪তম গ্রেডে। ফলে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের বেতনের পার্থক্য তিন ধাপ। এটি মেনে নিতে রাজি নন সহকারী শিক্ষকরা। তারা প্রধান শিক্ষকের এক ধাপ নিচে বেতন চান। এ নিয়ে একাধিকবার আন্দোলনও করেছেন সহকারী শিক্ষকরা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের দাবি প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেড। প্রায় চার বছর ধরে এ দাবি করে আসলেও আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ বিষয়ে আমরা সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে বৈঠক করেছি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কয়েক দফা আমাদের সভা হয়েছে। তারা আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ‘দেই-দিচ্ছি’ বলে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করেছেন। তারা যদি দ্রুত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না করেন তবে ঈদের পর কেন্দ্রীয় কমিটির সভা ডেকে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সিংহভাগ প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে কাজ করেন। সারাদেশে প্রায় তিন লাখ সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। আমরা নতুন করে আন্দোলনে নেমে সরকারকে বিব্রত অবস্থায় ফেলতে চাই না, এ কারণে এখনও অপেক্ষায় আছি। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারলে আমাদের গ্রেড পরিবর্তনের বিষয়টি সমাধান হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত তাদের বিষয়টি সমাধান করবেন বলেও মন্তব্য করেন এ শিক্ষক নেতা।

জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একাডেমিক শিক্ষাগত যোগ্যতার বেশ ব্যবধান রয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ মাধ্যমিক পাস, কেউ উচ্চমাধ্যমিক, কেউ আবার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাসও রয়েছেন। চাকরির বিধি অনুযায়ী, স্নাতক পাসের নিচে থাকলে ১২তম গ্রেড দেয়া হয় না। তবে যেসব শিক্ষক স্নাতক পাস, তারা ১২তম গ্রেড পেয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, নিয়োগ বিধিমালায় সহকারী শিক্ষকদের যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক পাস করা হয়েছে। সেই আলোকে আগামী নিয়োগ থেকে এটি বাস্তবায়ন হবে। শিক্ষকদের গ্রেড পরিবর্তন প্রস্তাবনাটি নতুন নিয়োগ বিধিমালার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগে নিয়োগ পাওয়া বেশকিছু শিক্ষক এসএসসি ও এইচএসসি পাস। তাদের কেন গ্রেড দেয়া হবে, সে বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এটা চূড়ান্ত হওয়ার আগে উভয় মন্ত্রণালয়ের একাধিক বৈঠক হবে। আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শুধুমাত্র গ্র্যাজুয়েট সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেড দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলেও মন্তব্য করেন সচিব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com